নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:০৬ বিকাল
সলিমুল্লাহ খানের নতুন গ্রন্থে ইতিহাসের ভিন্ন বয়ান
_original_1740142931.jpg)
দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খানের প্রথম সাক্ষাৎকারগ্রন্থ বাংলাদেশ: পঞ্চাশ বছর পর ।
জবি প্রতিনিধি: প্রকাশিত হলো দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খানের প্রথম সাক্ষাৎকারগ্রন্থ বাংলাদেশ: পঞ্চাশ বছর পর । বইটির সার্বিক পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মিনহাজ উদ্দীন। বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা মধুপোক। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটির পরিবেশক আগামী প্রকাশনী (৯ নং প্যাভিলিয়ন)।
বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধকে।
এ বছর প্রবন্ধ/গদ্য শাখায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে সম্মানিত হওয়া সলিমুল্লাহ খানের এ বইটি আত্মভাব গ্রন্থমালার প্রথম খণ্ড হিসেবে প্রকাশিত।
বিস্তারিত সাক্ষাৎকারের এই গ্রন্থটি তিনটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে রয়েছে সলিমুল্লাহ খানের বয়ানে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান। এখানে তিনি বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। পরের পর্বে রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনা ও বিভিন্ন ব্যক্তির ভূমিকার ভিন্ন কিছু পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ। আহমদ ছফা, তাজউদ্দীন আহমদ, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে সলিমুল্লাহ খানের আলোচনা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন বয়ানকে চ্যালেঞ্জ করে।
বইটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মিনহাজ উদ্দীন জানান, বাংলাদেশ: পঞ্চাশ বছর পর গ্রন্থের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের জন্য সলিমুল্লাহ খানের বিস্তারিতি একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। পরে সেই সাক্ষাৎকার কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করে একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছিল। এতে পাঠকের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক শাসনামল নিয়ে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান অনেক কড়া ও কটু সত্য উচ্চারণ করেছিলেন, যা পাঠকরা পছন্দ করেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান তাঁর বয়ান তুলে ধরেছেন। একটি প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন,
স্বাধীনতার জন্য যাকে বলা হয় সশস্ত্র সংগ্রাম, সেটার কোনো প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের ছিল না। তাঁরা ছিলেন পার্লামেন্টারি সংগ্রামের দল। তাঁরা জনমত সংগঠিত করেছেন। সবচেয়ে বড় বিজয় হয়েছে, নির্বাচনে জিতেছে। কিন্তু এখন পাকিস্তান যদি ক্ষমতা হস্তান্তর না করে, আমরা কী করব? এর কোনো প্রস্তুতি কি ছিল? ছিল না। এখনো সে তর্কটা চলছে দেশে।
মো. মিনহাজ উদ্দীন আরো জানান, এরপর সলিমুল্লাহ খানের সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি গ্রন্থ রচনার লক্ষ্যে আরও দুই দফা সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, যার শেষ পর্বটি অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের পর। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। সেসব ঘটনারও বিশ্লেষণ করে জুলাই অভ্যুত্থানের এক বিস্তারিত বয়ান তুলে ধরেছেন সলিমুল্লাহ খান।
মো. মিনহাজ উদ্দীনের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এখনো লেখা হয় নাই। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, অল হিস্ট্রি ইজ কনটেম্পোরারি হিস্ট্রি। ইতিহাস মাত্রই সমসাময়িক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে লিখতে হয়। আমাদের লোকেরা সাক্ষ্যটাই নষ্ট করে ফেলছে।’
বিভিন্ন বিষয়ে এমনই অনন্য বিশ্লেষণ উঠে এসেছে সলিমুল্লাহ খানের বয়ানে।
মন্তব্য করুন