১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন বগুড়ার একাংশ, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার : গ্রিড আপগ্রেডেশন কাজের জন্য বগুড়া শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশের ডিভিশন-৩ ও অন্যান্য ডিভিশনের কিছু অংশে আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকবে না বলে শহরে মাইকিং করা হলেও রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন কাটিয়েছেন। বিদ্যুৎহীন ১৩ ঘণ্টা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিলো না।
দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় এক ধরণের স্থবিরতা নেমে আসে। বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদনের কাজ দিনভর বন্ধ রাখতে হয়। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন বহুতল ভবনের বাসিন্দারা। লিফট বন্ধ ভবন থেকে নামতে এবং উঠতে পারেননি অনেকেই। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি বাড়িতে নিত্য ব্যবহারের পানি সংকট দেখা দেয়। দুপুরের পর অনেকেই পানি সংগ্রহের জন্য টিউবওয়েলের সন্ধান করতে দেখা যায়।
আবার অনেককেই পানির জার কিনে বাসায় ফিরতে দেখা যায়। আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার পরপরই শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশের ডিভিশন-৩ ও অন্যান্য ডিভিশনের কিছু অংশের প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এ অবস্থা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় রাত ৮টার দিকে।
গ্রিড আপগ্রেডেশন কাজের জন্য এই দুর্ভোগ জানিয়ে নেসকো’র ডিভিশন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, এই সময়ের মধ্যে পুরান বগুড়া গ্রিডের আপগ্রেডেশনের কাজ চলে। এ ব্যাপারে গত দুই দিন শহরে মাইকিংসহ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রচারণা চালানো হয়।
আরও পড়ুনআজ শনিবার দুপুরে জামিলনগরের একটি বহুতল ভবনে দুপুরের পর পানি শেষ হয়ে যায়। বাসায় ছোট শিশু ও বয়স্ক মা-বাবা থাকায় বালতি নিয়ে বের হয়েছিলেন ছেলে প্রান্ত (ছদ্ম নাম)। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার বাড়িতে টিউবওয়েল আছে তার খোঁজ করছিলেন। একটি টিনসেড বাড়িতে টিউবওয়েল পেয়ে দুই বালতি পানি নিয়ে চারতলা পর্যন্ত উঠতে তার গলদঘর্ম অবস্থা। বললেন, এতো দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ বিভাগের কী এত কাজ যে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছেন?
একই অবস্থা টিনপট্টি এলাকার গৃহবধূ সুরাইয়া সুলতানার বাসার। তিনি থাকেন সাততলা বাড়িতে, তার স্বামী অসুস্থ। আল্ট্রাসনো করতে হবে। কিন্তু উপর থেকে কীভাবে নামবেন ও উঠবেন। তাই তিনি নামেননি, পরীক্ষা করাতে যেতেও পারেননি। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। এসব এলাকার ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়।
সব থেকে বেশি সমস্যা হয়েছে বহুতল ভবনে। কোন কোন ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ জেনারেটর চালালেও ঠিকমতো লিফট চলেনি। সকাল থেক গভীর রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ বার বার বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করেছে। কিন্তু স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসগুলোও সন্ধ্যার পর ফোন রিসিভ করেনি। সন্ধ্যার পর এসব এলাকা ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহও বিঘ্নিত হয়। পানি না থাকায় বাসাবাড়িতে রান্না করাও সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ইন্টারনেট লাইনও ছিল বিচ্ছিন্ন।
মন্তব্য করুন