কুষ্টিয়ায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে আটক ৩

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গৃহবধূ সাথি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার ঘটনায় তার শ্বশুর, স্বামীর পরকীয়া প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন - উপজেলার সদকী ইউনিয়নের হুদা করাতকান্দি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মতিয়ার শেখ ( শ্বশুর), আগ্রাকুণ্ডা গ্রামের মৃত তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে মো. ফারুক (৪৫) ও তাঁর মেয়ে ফাহিমা খাতুন ( পরকীয়া প্রেমিকা)।
দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. সোলায়মান শেখ।
এদিকে আত্মহত্যা নয়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ( পরকীয়া প্রেম) জেরে গৃহবধূ সাথি খাতুনকে (২২) পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। রোববার রাতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এটি হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশকে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুনএর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে সাথির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছিল পুলিশ। তার স্বামী ইটভাটা শ্রমিক মো. সিমান্ত'র (৩০) ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও স্বজনরা।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, প্রায় আট বছর আগে করাতকান্দি গ্রামের মতিয়ার শেখের ছেলে সিমান্তর সঙ্গে সাথি খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের নাহিদ (৬) ও আফসানা (৪ মাস) নামের দুই সন্তান রয়েছে। তবুও প্রায় এক বছর পূর্বে সাথির খালাতো বোন ফাহিমার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান সীমান্ত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
সমস্যার সমাধানে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিসি বৈঠকও হয়েছে। ঘটনার প্রায় সপ্তাহখানেক আগে প্রেমিকাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে সীমান্তকে ৯০ হাজার টাকা দেন শ্বশুর মনছুর। তারপরও ৯ ফেব্রুয়ারি প্রেমিকাকে নিয়ে দিনঘর ঘুরাফেরা করেন সীমান্ত। ওই দিন রাতে সাথি তার স্বামীকে ঘুরাঘুরির বিষয়ে জানতে চান। তখন সীমান্ত তার স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে হত্যা করেন। পরে সাথির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যান।
সাথির বাবা মনছুর শেখ বলেন, মেয়েকে পরকীয়া প্রেমের জেরে জামাই সীমান্ত, প্রেমিকা ফাহিমা ও তাদের পরিবারের লোকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক করেছিল। রাতে চিকিৎসকের রিপোর্টে হত্যার বিষয় নিশ্চিত হয়েছি। আসামিদের উপযুক্ত শাস্তির প্রত্যাশায় সোমবার দুপুরে হত্যা মামলার এজাহার দিয়েছি।
কুমারখালী থানার ওসি মোঃ সোলায়মান শেখ বলেন, পরকীয়া প্রেমের জেরে সাথিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শ্বশুর, পরকীয়া প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকে অভিযান চলমান রয়েছে। থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন