বগুড়ায় ব্যাপকহারে বেড়েছে মশার উপদ্রব, নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা চায় পৌরবাসী

হাফিজা বিনা : বগুড়া শহরের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা গত কয়েক বছরের মশার উপদ্রবের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, আগে এপ্রিল থেকে নভেম্বরে মশার উপদ্রব বেশি থাকলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার ফেব্রুয়ারি-মার্চে মশার ব্যাপক বিস্তৃতি দেখা যাচ্ছে। দিনেও থাকছে মশার দাপট। আর সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে।
এ অবস্থায় বেশি সমস্যায় পড়েছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও রোজাদার মানুষেরা। বিকেলের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা মশারী টানিয়ে পড়ালেখা করছে ও বয়স্ক মানুষ রমজানের ইবাদত বন্দেগী করছেন। তবে বগুড়া পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, মশা নিধনে আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর তারা।
দিনে তো বটেই সূর্যাস্তের পরেই অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষ। শহরের যে সমস্ত এলাকাগুলোতে গাছের পরিমাণ বেশি রয়েছে, যে সমস্ত ওয়ার্ডে অপেক্ষাকৃত কম ঘনবসতি রয়েছে, সেই জায়গায় ব্যাপক হারে বেড়েছে মশার উপদ্রব। পাশাপাশি অন্যান্য ওয়ার্ডেও মশার উৎপাত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও, মশার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না শহরবাসী। যার ফলে মানুষের শান্তি নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গুর আতঙ্ক।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমের শেষের দিক থেকে শহর তো বটেই গ্রামেও মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে বগুড়ায় ব্যাপকভাবে মশা বেড়েছে। মশার প্রজনন রোধ করতে না পারায় মশার বংশবিস্তার বেশি হচ্ছে বলে তাদের ধারণা। মশার অত্যাচারে অতিষ্ট বগুড়া জামিলনগর এলাকার গৃহিনী তানজিনা বেগম জানান, তার মেয়ে চলতি এইসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
ছোট ছেলে ক্লাস এইটে পড়ে। দু’জনই বিকেলের পর থেকে মশারীর মধ্যে বসে পড়ালেখা করে। মশার যন্ত্রণায় তারা অতিষ্ঠ। মশা তাড়াতে কয়েল জ্বালানো, অ্যারোসল ছিটানোসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও রেহাই পাচ্ছে না।
আরও পড়ুনদুপুরের পর থেকেই কোত্থেকে যে মশা এসে ঘরের আনাচে-কানাচে ঘাপটি মেড়ে থাকে তা জানিনা। মশার কয়েল না জ্বালালে ঘরে-বাইরে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। শীত কমে যাওয়ার পর থেকেই মশা বেড়েছে। রমজান মাসে মশার উৎপাতে টিকে থাকা যায় না। বিছানায় না হয় মশারি টানানো হয়, বাকি সময় বাইরে কয়েল ধরিয়ে রাখতে হয়। কয়েলের ধোঁয়া ক্ষতিকর জানার পরও দিনে রাতে তা জ্বালাতে হচ্ছে।
ধোঁয়া ছাড়া কয়েল এবং এ্যারোসল জাতীয় মশা নিধন স্প্রে’র দামও অনেক বেড়েছে। সবার পক্ষে তা কেনা সামর্থের বাইরে বলে জানান শহরের বাদুরতলা এলাকার সাদিক হাসান। তিনি দাবি করেন প্রতি মাসে অন্তত একবার পুরো শহরে মশা নিধনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত পৌরসভার।
বগুড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও বগুড়া পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ এ ব্যাপারে করতোয়া’কে বলেন, প্রায় ৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় প্রতিদিনই কোন না কোন ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এর মধ্যে হয়তো কোন ওয়ার্ডে ছাড়া পড়েছে। তবে মশার প্রজনন ঠেকাতে পৌরসভার ড্রেনগুলো ছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডের ঝোপ-জঙ্গল, বাড়ির পাশে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং চলবে। এতে মশার উপদ্রব কমে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন