‘একজন হামাস সদস্যও নিরাপদ থাকবে না।’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসকে চূড়ান্ত পরিণতির হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি ইসরায়েলকে যা যা প্রয়োজন, সবকিছু পাঠাচ্ছি যাতে তারা কাজ শেষ করতে পারে। যদি আমার কথা না মানো, তাহলে একজন হামাস সদস্যও নিরাপদ থাকবে না।’এই হুমকি এমন এক সময়ে এলো যখন হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে সরাসরি আলোচনায় রয়েছে।
ওয়াশিংটন এতদিন হামাসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে চলছিল, কারণ মার্কিন নীতিতে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনা নিষিদ্ধ।
ট্রাম্প তার স্ট্যাটাসে জানান, যদি জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে ‘ভয়ানক পরিণতি’ অপেক্ষা করছে। তবে তিনি ইসরায়েলকে ঠিক কী ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট করেননি।ট্রাম্প যোগ করেন, ‘সব বন্দিদের এখনই মুক্তি দাও, দেরি নয় এবং যাদের হত্যা করেছ, তাদের মরদেহ ফেরত দাও—নইলে এটা তোমাদের জন্য শেষ!’
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘হামাসের নেতৃত্বকে বলছি, গাজা ছেড়ে যাওয়ার এখনই সময়, যতক্ষণ তোমাদের সুযোগ আছে।’
এ ছাড়া ট্রাম্প গাজার সাধারণ জনগণকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘গাজার জনগণের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, তবে তা কেবল তখনই সম্ভব, যদি তোমরা জিম্মিদের আটকে না রাখো। যদি রাখো, তাহলে তোমাদের অস্তিত্ব থাকবে না!’
এর আগেও ট্রাম্প হামাসকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। গত ডিসেম্বরেও তিনি বলেছিলেন, যদি তার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হয়, তবে ‘ভয়ানক পরিস্থিতির’ মুখোমুখি হতে হবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট নিশ্চিত করেছেন, জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে। তিনি জানান, এই আলোচনার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে।লেভিট আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা করছেন তা আমেরিকান জনগণের স্বার্থে।
আরও পড়ুনজিম্মি মুক্তির দায়িত্বে থাকা মার্কিন বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার এটিকে ‘ভালো প্রচেষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ফিলিস্তিনি একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ‘দুটি সরাসরি বৈঠক’ হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, এখনও ৫৯ জনকে গাজায় আটক রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ২৪ জন জীবিত থাকতে পারেন। তাদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন।প্রথমে সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এই সংলাপের খবর প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়, মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের একটি বড় চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে কাতারে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা মিক মালরয় জানান, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তার নাগরিকদের মুক্ত করতে আরও ‘সক্রিয়ভাবে’ কাজ করা। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি এই আলোচনা ইসরায়েলের সঙ্গে যথাযথভাবে সমন্বিত না হয়, তাহলে এটি তাদের নাগরিকদের মুক্তির প্রচেষ্টাকে জটিল করতে পারে।ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই আলোচনার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মার্কিন বিশেষ দূত বোয়েলার সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মন্তব্য করুন