নির্বাচনের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন কাজী সালাউদ্দিন

স্পোর্টস ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন সাফের গঠনতন্ত্র সংশোধনে আগামী ৪ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গঠনতন্ত্রে নির্বাচনে প্রার্থীতার বয়সসীমা কোটা উঠিয়ে দেওয়ার জন্যই মূলত এই উদ্যোগ।
২০২২ সালের সাফের গঠনতন্ত্রের তৃতীয় অধ্যায়ের ৩১ অনুচ্ছেদের ৫ নম্বর ধারায় রয়েছে, সাফের নির্বাহী কমিটির প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনের সময় ৭০ বছরের মধ্যে থাকতে হবে। ৪ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় বিশেষ সভায় বয়সের এই কোটা উঠানোর প্রস্তাব হবে। সভায় উপস্থিত সংখ্যার চার ভাগের তিন ভাগের সম্মতিতে গঠনতন্ত্র সংশোধন সম্ভব এটি উল্লেখ রয়েছে ২৮ অনুচ্ছেদের ৪ নম্বর ধারায়।
সাফে নির্বাচনের বয়সসীমা উঠানোর জন্য অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন প্রস্তাব করেছিল। সেই প্রস্তাবে সমর্থন ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের। সদস্য দেশগুলোর প্রস্তাবনার ভিত্তিতে সাফ বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করে। চারটি দেশ ইতোমধ্যে বয়সসীমা উঠানোর পক্ষে থাকায় এটি পাশ হওয়া যেন শুধু সময়ের অপেক্ষাই। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও নির্বাচনে বয়সের সীমা তুলে নিয়েছে। বাফুফের গঠনতন্ত্রে আবার ২৫ বছরের কম ও ৭২ বছর বয়সের বেশি নির্বাচনে অযোগ্য।
সাফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের জন্ম ১৯৫৪ সালে। সাফের বর্তমান কমিটির মেয়াদ ২০২৬ সালের জুনে শেষ হবে। বিদ্যমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়সের জন্য ২০২৬ সালের নির্বাচনে সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ ছিল না। ৪ এপ্রিল বয়সের বিষয়টি উঠে গেলে সালাউদ্দিনের পুনরায় প্রার্থী হতে বাধা থাকবে না।
তবে এক্ষেত্রে তার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মুখাপেক্ষী হতে হবে। সদস্য দেশগুলোর মনোনয়ন ছাড়া সাফে প্রার্থী হওয়া যায় না। সালাউদ্দিন এতদিন বাফুফে সভাপতি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বাফুফের মনোনয়ন পেয়েছেন। এখন বাফুফের সভাপতি না থাকলেও বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সাথে তার যথেষ্ট সখ্যতা (ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন) রয়েছে। ফলে ২০২৬ সালের সাফ নির্বাচনে বাফুফের মনোনয়ন কাজী সালাউদ্দিন পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
আরও পড়ুনফিফায় সেপ ব্ল্যাটার অধ্যায় সমাপ্তির পর গঠনতন্ত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে। প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি নির্ভরতা ভাঙতে টানা তিন বার বা সব মিলিয়ে তিনবারের বেশি কেউ নির্বাহী কমিটিতে থাকতে পারবে না ফিফা গঠনতন্ত্রে এমন নিয়ম করে। সেই আলোকে সাফের গঠনতন্ত্রের ৩১ অনুচ্ছেদের ৪ নম্বর ধারায় রয়েছে, নির্বাহী কমিটির যে কোনো পদ সভাপতিসহ টানা তিন বার বা সব মিলিয়ে তিন বার অথবা ১২ বছরের অধিক সময়কাল কেউ অধিষ্ঠিত হতে পারবে না।
২০২২ সালে যখন এটি অনুমোদিত হয় ততক্ষণে কাজী সালাউদ্দিন তিন বার সাফ সভাপতি হিসেবে ১২ বছরের বেশি সময় কাজ করছিলেন। ২০২২ সালে এটি গঠনতন্ত্রে অর্ন্তভুক্তি হওয়ায় বিগত মেয়াদ হিসেবে আসেনি। ২০১৮-২০২২ কার্যনিবাহী কমিটি থেকে এটার কার্যকারিতা শুরু। ২০২২ সালের জুনে সালাউদ্দিন টানা চতুর্থবার হলেও সর্বশেষ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী টানা দুই বার হয়েছেন। সেই আলোকে ২০২৬ সালের নির্বাচনেই তার শেষ হতে পারে যদি বয়সের সীমা উঠে যায় (বাফুফের মনোনয়ন পাওয়া সাপেক্ষে)।
৪ এপ্রিল বিশেষ সাধারণ সভার আগে আগামী সপ্তাহের ১১ মার্চ নেপালে নির্বাহী কমিটির সভা রয়েছে সাফের। সেই সভা মূলত জুনে অনুষ্ঠিতব্য পুরুষ সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ নিয়ে। হোম অর অ্যাওয়ে নাকি বিগত সময়ের মতো কেন্দ্রীয় ভেন্যুতেই সাফ আয়োজন হবে এটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার জন্যই এই সভার আহ্বান। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই পদ্ধতিতে খেলা বেশ চ্যালেঞ্জিং অন্যদিকে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের চাহিদা পূরণ করাও সাফের জন্য চাপ।
মন্তব্য করুন