যৌন নিপীড়নের অপরাধে অস্ট্রেলিয়ায় বিজেপি নেতার ৪০ বছরের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতীয় জনতা পার্টি’র (বিজেপি) নেতা বালেশ ধঙ্করকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার আদালত। দক্ষিণ কোরিয়ার পাঁচ নারীর ওপর যৌন নিপীড়নের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য তাকে এই দণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রুল ইন।
৪৩ বছর বয়সি ধঙ্কর বিজেপি’র অস্ট্রেলিয়া শাখার প্রতিষ্ঠাতা মুখপাত্র। সে সেখানে বিজেপি’র স্যাটেলাইট গ্রুপ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ছিল এবং হিন্দু কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়ার একজন মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করে। ১৩টি যৌন নিপীড়নসহ ৩৮টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় সে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সে একাধিক অপরাধে দোষী প্রমাণিত হয়েছে। ধঙ্কর ভারতের হরিয়ানার একজন বাসিন্দা একসময় আইটি কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করতো, কিন্তু পরবর্তীতে সে এই জঘন্য অপরাধগুলো সংঘটিত করে। তার বাবা ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক সাবেক কর্মকর্তা ছিল এবং নয়াদিল্লি সরকারের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত ছিল। তাদের পরিবারের খ্যাতি রয়েছে।
আদালতের রায় অনুযায়ী, সিরিজ যৌন আক্রমণ পরিকল্পনা করেছিল ধঙ্কর, যেখানে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে সে তরুণীসহ নারীদের আকৃষ্ট করতো। বিজ্ঞাপনগুলোর মাধ্যমে চাকরির সুযোগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো, কিন্তু নারীরা যখন সাড়া দিতো তখন সে তাদের তার অবস্থানরত হোটেল কক্ষ অথবা ভাড়া ফ্ল্যাটে কথা বলার জন্য ডাকতো। এই সুযোগে ধঙ্কর তাদের মদ্যপ করে অচেতন করত এবং অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় তাদের ওপর আক্রমণ করতো। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধঙ্কর এসব নারীদের চেহারা, বুদ্ধিমত্তা এবং সৌন্দর্য অনুযায়ী একটি এক্সেল স্প্রেডশিটে সাজিয়ে রাখতো। এছাড়া, সে এই শারীরিক আক্রমণগুলোর ভিডিও ধারণ করতো এবং পরবর্তীতে সেগুলো সংরক্ষণ করতো। তার নিপীড়নের শিকার নারীরা, যাদের বয়স ২১ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে ছিল, এই ঘটনার সময় অচেতন ছিল বা অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় ছিল। ২০২৩ সালে, অস্ট্রেলিয়ার আদালত ধঙ্করকে ৩৯টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছিল, যার মধ্যে ছিল ১৩টি যৌন নিপীড়ন ঘটনা।
আরও পড়ুনএই অপরাধী নেতার কর্মকাণ্ড ভারতীয় সমাজে কিছু লোকের নৈতিক অবক্ষয়ের বিষয়টি সামনে এনেছে। তার কর্মকাণ্ড অনেকের জন্য একটি বড় ধাক্কা। বিশেষ করে, বিজেপি এবং মোদি সরকারের নারী অধিকার সুরক্ষা বাস্তবায়নে এই ধরনের ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আসা নিয়ে তীব্র সমালোচনা উঠেছে।
মন্তব্য করুন