ঈদের সামনে বগুড়ায় টানাপার্টি ও পকেটমারদের তৎপরতা বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের সামনে বগুড়া শহরে পকেটমার ও টানাপার্টি তৎপরতা বেড়েছে। প্রায়ই এদের খপ্পড়ে পড়ে মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে। এদের ধরতে সংলিষ্ট ফাঁড়ি পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। যে কারনে এই অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে অপরাধীদের ধরতে সংলিষ্ট ফাঁড়ির পুলিশ তেমন তৎপর নয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শহরর প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা এলাকায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় টানা পার্টি। এই পার্টির বেশিরভাগ সদস্যই কিশোর-যুবক,বখাটে-টোকাই। সাতমাথায় যানজট বাড়লেই এদের পোয়াবারো। যানজটের সময় রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন থেমে যায় বা ধীরগতিতে চলতে থাকে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগায় টানাপার্টি।
যানজটের মধ্যে টানাপার্টির সদস্যরা রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকে রাখা মালামাল ছোঁ দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পিছু ধাওয়া করেও তাদেরকে আর ধরা যায়না। এ সময় তারা হাত বদলের মাধ্যমে মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। তারা মালামাল নিয়ে পালোনোর শুধু একজন থাকেনা। সক্রিয় থাকে ৩-৪ জন। মালামাল হাতিয়ে নেয়ার সাথে সাথে হাত বদল করা হয়। হাত বদলের মাধ্যমেই তারা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
শুধু টানাপার্টিই নয়, পকেটমারদেরও দৌরাত্ম বেড়েছে সমানতালে। পকেটমারদের একটি গ্রুপ সাতমাথায় সব সময় সক্রিয় থাকে। পকেটমারদের খপ্পরে পড়ে প্রায়ই কারো না কারোর খালি হচ্ছে। বিশেষ করে পথচারীরা যখন রাস্তা পার হন সেসময় তারা তাদের পিছু নেয় এবং পকেট মেরে সর্বশান্ত করে। শুধু সাতমাথা নয়, শহরজুড়েই টানাপার্টি ও পকেটমারদের তৎপরতা বেড়েছে।
শহরের নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট, রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, চেলোপাড়া, থানা মোড়, ১, ২ ও ৩ নম্বর রেল ঘুমটি, বগুড়া রেলস্টেশন, ৪ মাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় প্রতিনিয়ত পকেটমারার ঘটনা ঘটে। ঈদের আগে এদের তৎপরতা আরও বেড়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, বগুড়ার সিংহভাগ পকেটমার বসবাস করে শহরের উত্তর চেলোপাড়ায় সান্দারপট্টিতে। সেখানে দেড় শতাধিক পকেটমারের বসবাস। এ ছাড়া আরও কিছু পকেটমার কাটনাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে থাকে।
আরও পড়ুনমূলত : এসব এলাকার পকেটমাররাই শহরের অভ্যন্তরে জনগণের পকেটমারে। পকেটমারদের প্রধান টার্গেট টাকা ও মোবাইল ফোন। পকেটমাররা সবচেয়ে বেশি টাকা ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয়। প্রায় প্রতিদিনই সাতমাথায় এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই। বিশেষ করে সাতমাথা এলাকায় মানুষের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সদর ফাঁড়ি পুলিশের হলেও তারা এই অপরাধীদের ধরতে তেমন সক্রিয় নয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
এ এ ব্যাপারে সাতমাথা এলাকায় টানাপার্টি ও পকেটমারদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সিরাজুল হক বলেন, তিনি ছুটিতে গিয়েছিলেন। আজ সোমবার (১০ মার্চ) কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। তিনি টানাপার্টি ও পকেটমারদের ধরতে ফাঁড়ি পুলিশের দুটি দলকে মাঠে নামিয়েছেন। ইতিপূর্বে টানাপার্টির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, শহরসহ বগুড়া সদরে টানাপার্টি ও পকেটমারসহ সব ধরনের অপরাধ রোধে সদর থানার পুলিশ কাজ করছে। সেইসাথে ফাঁড়িগুলোকেও সক্রিয় থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন