ময়মনসিংহে মৎস্য অভয়াশ্রম দখলের চেষ্টা করছে আ’লীগ নেতা

নিউজ ডেস্ক: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার টঙ্গীর বিলে স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রম দখলে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন একেএম মোফাজ্জল হোসেন কাইয়ুম নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে ভেকু দিয়ে শুরু করেছেন খুঁড়াখুঁড়ি।
তিনি উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নান্দাইল সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে আচারগাঁও ইউনিয়নের টঙ্গীর বিলটি অবস্থিত।
২০১৫-১৬ অর্থ বছরে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে এডিপির আওতায় সরকারি খাস জায়গায় গড়ে উঠেছে মৎস্য অভয়াশ্রম। প্রতি বছর এ স্থানে মৎস্য অবমুক্ত করা হয়। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে অভয়াশ্রমটি কয়েক লাখ টাকা খরচে মেরামত করা হয়। সেখানে রয়েছে স্থায়ীভাবে দুটি সাইনবোর্ড। অভয়াশ্রমের চারদিকে লাল নিশান টানানো থাকে। পাশেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা একেএম মোফাজ্জল হোসেন কাইয়ুমের বেশ কয়েকটি বড় বড় ফিসারি রয়েছে। সম্প্রতি তিনি ভেকু দিয়ে অভয়াশ্রমের সাইনবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। সেখানে পুকুর খনন করতে মাটি কাটা শুরু করেছেন। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলেও অব্যাহত রয়েছে মাটি কাটার মহোৎসব।
স্থানীয়রা জানান, প্রকাশ্যে সাইনবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এত বছর মৎস্য অভয়াশ্রমটি ঠিকঠাকভাবে থাকলেও এখন এটি দখলে নেওয়ার পায়তারা চলছে। মোফাজ্জল হোসেন কাইয়ুম স্থানীয়দের কাছে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। এছাড়া দাপটের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এলাকায় তার মতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলবে, এখনো এমন লোক খুব বেশি খোঁজে পাওয়া যায় না। বর্তমানে এ আওয়ামী লীগ নেতা পলাতক থাকলেও মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসছেন। এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কয়েকদিন পর আবারও চলে যাচ্ছেন আত্মগোপনে।
আজহারুল ইসলাম নামের একজন বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রমটি সরকারি জায়গায় গড়ে উঠেছে। এটির সামান্য অংশও দখলে নিতে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, একটু দখল হলে; একপর্যায়ে ধীরে ধীরে পুরোটাই দখল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার বাড়ির একজন বলেন, কাইয়ুম গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। এজন্য ময়মনসিংহ জেলার বাহিরে স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। মৎস্য অভয়াশ্রমের সঙ্গে কাইয়ুমের ফিসারি রয়েছে। ফিসারি বড় করার জন্য কাইয়ুমের নির্দেশে খুঁড়াখুঁড়ি করা হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহানা নাজনীন বলেন, কয়েকদিন আগে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়েছি। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে নান্দাইল থানার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, মোফাজ্জল হোসেন কাইয়ুম আত্মগোপনে রয়েছেন। পুলিশ তাকে খুঁজছে।
মন্তব্য করুন