কুষ্টিয়ায় পল্লিচিকিৎসক হত্যার দায়ে ৯ জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ার মিরপুরে পল্লিচিকিৎসক লুৎফর রহমান ওরফে সাবুকে (৫০) হত্যার দায়ে ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সুমিয়া খানম এ রায় দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খন্দকার সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পল্লিচিকিৎসক সাবুকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত মাহাবুবুল হক বুলু বিশ্বাসের ছেলে মশিউর রহমান মিলন, আমবাড়িয়া এলাকার মৃত জুলমত আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন বুড়ো, মৃত ইলিয়াস হোসেন খেদ আলীর ছেলে এখলাস আলী, বিল্লাল হোসেনের ছেলে মুরাদ আলী, আশান আলীর ছেলে মাহাবুল হোসেন, বাবর আলী বাবুর ছেলে রাশেদুল আলী, রবিউল ইসলামের ছেলে ওয়াসিম আলী, মৃত মসলেম মন্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলাম এবং শুপুকুরিয়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে হেলাল উদ্দিন শিলু।
রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুনআদালত সূত্রে জানা গেছে, পল্লিচিকিৎসক লুৎফর রহমান সাবু ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে কুষ্টিয়ার মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে আমবাড়িয়া ঈদগাহের কাছে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা সাবুর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং এলোপাতাড়িভাবে রামদা দিয়ে তার মাথা, পিঠ, মুখ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাবুর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান হাবিব বাদী হয়ে মিরপুর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত দিনে এ মামলার ৯ জনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে খালাস দেন বিচারক।
নিহত লুৎফর রহমান সাবু মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত অজিত মোল্লার ছেলে। তিনি মিরপুর উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদান করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, মৃত্যুর আগে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। আমবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন তিনি।
মন্তব্য করুন