ভিডিও সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ায় লাল পিঁপড়ার কামড়ে ২৩ জন হাসপাতালে

সংগৃহীত,অস্ট্রেলিয়ায় লাল পিঁপড়ার কামড়ে ২৩ জন হাসপাতালে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ায় লাল পিঁপড়ার কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দেশটির জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম এবিসি জানিয়েছে, মার্চ মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পিঁপড়ার কামড়ে ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই লাল পিঁপড়া বা ফায়ার অ্যান্টের আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া নয়। এগুলো মূলত দক্ষিণ আমেরিকার প্রজাতি, যার বৈজ্ঞানিক নাম সোলেনোপসিস ইনভিক্টা। এটি বিশ্বের অন্যতম আক্রমণাত্মক পিঁপড়া। এর বিষাক্ত কামড়ে শরীরে ফোসকা পড়ে ও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমনকি মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের বাসিন্দারা বহু বছর ধরে এই পিঁপড়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন। কিন্তু চলতি মার্চের শুরুতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের পর বৃষ্টিপাতের কারণে গবাদিপশু ও মানুষের ওপর এই পিঁপড়ার আক্রমণ বেড়ে গেছে। পানির উচ্চতা বাড়ায় পিঁপড়াগুলো গর্ত থেকে উঠে ভেলা তৈরি করে নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এবিসি জানিয়েছে, গত ১ মার্চ থেকে ন্যাশনাল ফায়ার অ্যান্ট ইরেডিকেশন প্রোগ্রামে লাল পিঁপড়ার কামড়ের চরম প্রতিক্রিয়ার ৬০টি রিপোর্ট এসেছে, যার মধ্যে ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্মাণ শ্রমিক স্কট রাইডার এবিসিকে জানিয়েছেন, বারবার পিঁপড়ার কামড়ে তাঁর পা ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে—বারান্দায়, ঘরের ভেতর, লন মেশিন ও ট্র্যাক্টরের ওপরে।’

এবিসি আরও জানিয়েছে, কুইন্সল্যান্ডের এক বাসিন্দা তাঁর কুকুরছানাকে একটি ফায়ার পিঁপড়ার বাসার ওপরে মৃত অবস্থায় খুঁজে পেয়েছেন।

গত সোমবার কুইন্সল্যান্ড রাজ্য সরকার লাল পিঁপড়া দমনে ২৪ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের (প্রায় ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) তহবিল ঘোষণা করেছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘লাল পিঁপড়া অর্থনীতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।’

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এই পিঁপড়া ফসল, বাগান এমনকি পার্কও ধ্বংস করতে পারে এবং মানুষ, বন্যপ্রাণী, পশু ও পোষা প্রাণীদের বিপন্ন করতে পারে।’

গত শতাব্দীতে লাল পিঁপড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছর প্রথমবারের মতো ইউরোপেও এই পিঁপড়ার দেখা মেলে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় লাল পিঁপড়ার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ২০০১ সালে।

কুইন্সল্যান্ডে এই পিঁপড়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা পুরো অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কুইন্সল্যান্ডের প্রাথমিক শিল্প মন্ত্রী টনি পেররেট বলেছেন, ‘অন্যান্য দেশে ফায়ার পিঁপড়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, খেলাধুলা বন্ধ করে দিয়েছে, বারবিকিউ বাতিল করেছে, সৈকত বন্ধ করেছে এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লাল পিঁপড়াকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেব না। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা এর বিস্তার প্রতিরোধ করতে পারব।’

সূত্র: এবিসি

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘এক রুমে বন্দি’ থেকে মুক্ত খালেদার ৭ বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ

বাংলাদেশ দলে খেলে কেমন পেলেন হামজা

চোট কাটিয়ে ফিরেই মেসির গোল, জিতল মায়ামিও

ক্রেতাকে বোল দিয়ে পিটিয়ে মারলেন আলু বিক্রেতা

চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার হওয়া ৩ নারীকে বেনাপোলে হস্তান্তর

নারায়ণগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে পিটিয়ে হত্যা