ভিডিও মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫

সিরাজগঞ্জে হুড়াসাগর ও ইছামতী নদীর বুক জুড়ে চলছে ফসলের আবাদ

সিরাজগঞ্জে হুড়াসাগর ও ইছামতী নদীর বুক জুড়ে চলছে ফসলের আবাদ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ছিল হুড়াসাগর, ইছামতী, ফুলজোড় সহ ছোট ছোট অনেক নদী। কিন্তু কালের বিবর্তনে ভরাট হয়ে নদীগুলোর প্রাণ বিলীনের পথে। নাব্য সংকটে নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে সবুজ ফসলের।

অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে অনেক নদী। এক সময়ের খরস্রোতা নদীর বুকজুড়ে দেখা দিয়েছে সবুজ ফসলের মাঠ। শুকনো মৌসুমে পানি নেই, বর্ষা মৌসুমে এসব নদীই আবার দুই কূূল ছাপিয়ে দুর্দশার কারণ হয়। বর্ষার পানি ধারণক্ষমতা নেই বেশিরভাগ নদীর। এতে বর্ষা মৌসুমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

স্থানীয়রা জানান, ইছামতী ও হুড়াসাগর নদীতে একসময় অনেক স্রোত ছিল। বড় বড় নৌকা, ট্রলার, লঞ্চসহ নানা ধরনের নৌযান চলাচল করত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এগুলো হারিয়ে গেছে। নদীতে আর পানিই দেখা যায় না, নদীর স্রোত তো দূরের কথা। বর্ষাকালে যতটুকু পানি আসে সেটা অল্প দিনের মধ্যেই শুকিয়ে যায়।

বর্তমানে ইছামতী ও হুড়াসাগর নদীতে পানি নেই বললেই চলে। নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। সেখানে ধান, পাট, সরিষা, গমসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। নদীতে পানি না থাকায় পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। সেচের জন্য এ দুই নদীর ওপর শতভাগ নির্ভর করতে হয় এলাকার কৃষকদের। বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে পানি সংকটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ একাধিকবার নদী খননের দাবি জানানো হলেও তেমন কোনো সুফল মেলেনি।

কামারখন্দের চর টেংরাইল গ্রামের কৃষক সোবাহান আলী, শফি এবং বেলকুচি উপজেলার সমশপুর গ্রামের অনেক কৃষক বলেন, আমরা মনে প্রাণে চাই নদী বেঁচে থাকুক। নদী আমাদের শুধু মাছই দেয় না, সারা বছর চাষাবাদের কাজে সেচের পাশাপাশি নদীর পানিও ভূমিকা রাখে। বর্ষার সময় নদীর পানি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় ফসলের জমিতে পলি জমে মাটির উর্বরতা বাড়ায় এতে ফলন বাড়ে। তাই আমরা উল্লেখিত নদী গুলো খননের জোর দাবি জানাই।

আরও পড়ুন

উপজেলার কাজীপুরা গ্রামের আব্বাস বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম এই হুড়াসাগর নদীতে স্রোতধারা দেখেছি, সেখানে অনেকেই স্রোতে ভেসে যেত। স্রোতের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে নদীতে নামতেই অনেকে ভয় পেয়েছি। অথচ সেই নদী আজ মরা গাঙে পরিণত হয়েছে। এর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা এই হুড়াসাগর নদী খনন করে নদীর স্বাভাবিক জীবন ফেরানোর দাবি জানাই।

কামারখন্দের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, হুড়াসাগর নদীতে সাড়া বছর পানি  থাকতো, থাকতো মাছ। যা এলাকার মানুষের চাহিদা পূরণসহ অনেক মৎসজীবীরা মাছের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করত। উৎপাদিত ফসলে সেচ ব্যবস্থায়ও ব্যবহৃত হতো এই নদীর পানি। অতীতের সেই উত্তাল হুড়াসাগর নদী সংস্কারের অভাবে আজ গোচারণ ভুমিতে পরিণত হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মকলেসুর রহমান জানান, ফুলজোড়, ইছামতী ও হুড়াসাগর নদী গুলোর মধ্যে ফুলজোড় নদীর কিছু খননকাজ করা হয়েছে। ইছামতী নদীর প্রবেশমুখ কাজীপুর উপজেলায় এরই মধ্যে খননের কাজও হয়েছে। উল্লেখিত নদী গুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ে খনন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কাজ সমাপ্ত হলে নদী গুলো আগের রূপ ফিরে পাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ড. ইউনূসকে মোদির চিঠি

নারায়ণগঞ্জে যুবককে গুলি করে হত্যা

কুষ্টিয়ায় ঈদগাহে টাকা আদায় নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৯

ড. ইউনূসকে শাহবাজ শরিফের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

ঈদের নামাজে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়