ঈদের দিন গাজায় ৬৪ জনকে হত্যা করলো ইসরায়েল

ঈদের দিনও রক্তপাত থেকে রেহাই পেলো না গাজা। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে রোববার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, রাফাহ ও খান ইউনিসে একাধিক বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় আরও বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন।
এদিকে, ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, তারা রাফাহ থেকে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে, যারা গত সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছিলেন। আল জাজিরার তথ্যানুসন্ধান সংস্থা সানাদের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই হামলায় অন্তত পাঁচটি উদ্ধারকারী অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে।
পিআরসিএস এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ও গোটা মানবতার জন্য একটি ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। তারা আরও বলেছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর ইসরায়েলের হামলা যুদ্ধাপরাধ ছাড়া কিছু নয়।
গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েল চলতি মার্চের শুরু থেকেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রেখেছে, ফলে খাবার সংকট ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি বলেন, ঈদের দিনে ফিলিস্তিনিদের ভালো খাবার খেয়ে রোজা ভাঙার কথা ছিল, কিন্তু আজ তাদের একবেলা খাবার জোগাড় করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে গেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে নিরস্ত্র করার পাশাপাশি তাদের নেতাদের গাজা ছাড়ার শর্ত দিয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে হামলা আরও জোরদার করার হুমকি দিয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ২৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৫ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া নিখোঁজদের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করলে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন