ভিডিও সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইনে পিৎজা, বার্গার মোমো বিক্রি করে শারমিনের মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

অনলাইনে পিৎজা, বার্গার মোমো বিক্রি করে শারমিনের মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

নিজের আলোয় ডেস্ক ঃ মাত্র ৯ হাজার টাকা নিয়ে নিজের তৈরি করা খাবার অনলাইনে বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিলেন শারমিন আক্তার (৩০)। দুই বছর আগে শুরু করা সেই ব্যবসা দ্রুতগতিতে প্রসারিত হয়। সুস্বাদু ও সুলভ মূল্য হওয়ায় তার বানানো পিৎজা, বার্গার, রোল, পিঠা ও মোমো ক্রেতাদের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে শারমিনের আয়ও বাড়তে থাকে।
প্রথমে লাভ কম হলেও এখন তার মাসে আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আয়ের টাকায় স্বাবলম্বী হয়েছেন শারমিন। স্বামীর ব্যবসায় সহায়তা করছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাচ্ছেন। বাসার প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাব কিনেছেন। তার দেখাদেখি আশপাশের অনেক নারী অনলাইন ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পেয়েছেন জয়িতা পুরস্কার।
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার কদমতলী গ্রামের শারমিন স্বামীর নাম সোহাগুজ্জামান লাবন। শারমিন ও লাবন দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে এবং পাঁচ বছরের একটি মেয়ে আছে। উপজেলা সদরের কলাদী এলাকায় নিজেদের বাড়িতে থাকেন তারা।
শারমিন আক্তার জানান, ২০১০ সালে উপজেলা সদরের একটি মহিলা কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১২ সালে এইচএসসি শেষ করে ২০১৭ সালে স্নাতক পাস করেন। এরপর ২০১৯ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে এমএতে ভর্তি হন।
নারী উদ্যোক্তা শারমিন বলেন, শৈশব থেকেই তার লক্ষ্য ছিল বড় হয়ে বাবা বা স্বামীর মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজে কিছু করবেন। স্বাবলম্বী হবেন। সেই লক্ষ্যে ২০২৩ সালে ইউটিউব ঘেঁটে কেক, পিৎজা, বার্গার, মোমোসহ বিভিন্ন খাবার তৈরির ওপর প্রশিক্ষণ নেন। ওই বছর মাত্র ৯ হাজার টাকা চালান নিয়ে তিনি, তার ছোট বোন লতা ও পাশের বাড়ির রিতু আক্তারকে নিয়ে অনলাইনে একটি পেজ খোলেন। নাম দেন ‘মুচকান কেক হাউস।’ তিনজন মিলে খাবার বানানো শুরু করেন। পরে অনলাইনে ক্রেতাদের কাছে সেই খাবার বিক্রি শুরু করেন। প্রথমে ৯ হাজার টাকার পুঁজিতে লাভ হয় ১৫ হাজার টাকা। শারমিন আক্তার বলেন, অবিরাম চেষ্টা ও শ্রম দিয়ে তারা তিনজন পণ্য তৈরি করেন। তাদের খাবার সুস্বাদু ও দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় অনলাইনে ভোজনরসিকদের কাছে ধীরে ধীরে চাহিদা বাড়তে থাকে। অনলাইনের ক্রেতাদের মধ্যে যারা সশরীর আসতে না পারেন, তাদের কাছে নিজেরাই পণ্য পৌঁছে দেন। এক পাউন্ড ভ্যানিলা কেক বানাতে খরচ পড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বিক্রি হয় ৫৫০ টাকা। ক্রেতাদের ধরে রাখার স্বার্থে মাঝেমধ্যে কিছু কম দামেও পণ্য বিক্রি করেন। প্রতি মাসে গড়ে শতাধিক কেক বিক্রি হয়। কেকসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য মিলে মাসে দুই শতাধিক পণ্য বিক্রি করেন। প্রতি মাসে গড়ে আয় হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। নিজের আয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি স্বামীর ব্যবসা ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে সহায়তা করছেন শারমিন। পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনেছেন, কিনছেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন থেকে এবার জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন।
শারমিন আক্তার বলেন, আমার স্বপ্ন, ভবিষ্যতে আরো বড় আকারে অনলাইনের এ ব্যবসা চালাব। সারা দেশের মানুষের কাছে যাতে আমার প্রোডাক্ট পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। অবিরাম শ্রম দিচ্ছি। আশা করি, আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। বাকিটুকু ওপরওয়ালার হাত।

 

আরও পড়ুন

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘প্রথম আলোকে’ জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন জামায়াত আমির

এবার ফ্যাসিস্ট মুক্ত পহেলা বৈশাখ পালন করা সম্ভব হয়েছে: নাহিদ

কৃষক-রিকশাচালকদের প্রতিনিধিরাও অংশনেন আনন্দ শোভাযাত্রায়

বিদেশিরাও নেচে-গেয়ে মেতেছিলেন আনন্দ শোভাযাত্রায়

ভিয়েতয়াতনাম দিয়ে শি জিনপিং এর সফর শুরু 

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ রমনার বটমূলে নীরবতা পালন