মার্চ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২৩৩

চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশের সড়কে ৫৮৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০৪ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ২৩১ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ৮৯ জন ও শিশু ৯৭ জন। শনিবার (১২ এপ্রিল) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সই করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক মাসেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৩৩ জন, যা মোট প্রাণহানির ৩৮.৫৭ শতাংশ। পথচারী নিহত হয়েছেন ১০৯ জন (১৮.০৪ শতাংশ) এবং যানবাহনের চালক ও সহকারী ৯৮ জন (১৬.২২ শতাংশ)।
নৌ ও রেল দুর্ঘটনাও উল্লেখযোগ্য
মার্চ মাসে ৬টি নৌ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪ জন। পাশাপাশি ১৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ জন।
যানবাহনভিত্তিক পরিসংখ্যান
সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে মোটরসাইকেল আরোহীদের মধ্যে। এর সংখ্যা ২৩৩ জন। এরপর থ্রি-হুইলার যাত্রী ১১৯ জন, ট্রাক-পিকআপ-ট্রলি ইত্যাদির আরোহী ৫৬ জন, বাসযাত্রী ৩২ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-জিপ আরোহী ১৭ জন, স্থানীয় যানবাহনের যাত্রী ২৭ জন এবং বাইসাইকেল বা রিকশা আরোহী ১১ জন।
সড়ক ও বিভাগ ভিত্তিক দুর্ঘটনার চিত্র
তথ্য অনুযায়ী জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২৮টি (৩৮.৮৪ শতাংশ), আঞ্চলিক সড়কে ২৫৬টি (৪৩.৬১শতাংশ), গ্রামীণ সড়কে ৭২টি এবং শহরের সড়কে ৩১টি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দেখা গেছে, ১৮২টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৪ জন। আর সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে কম। সেখানে ২৪টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আর একক জেলা হিসেবে বগুড়ায় সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন ৩২ জন।
অন্যদিকে মার্চ মাসে নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পেশার মানুষও রয়েছেন ১২ জন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, ৭ জন ব্যাংক-বিমা কর্মকর্তা, ২১ জন বিক্রয় প্রতিনিধি, ৮ জন পোশাক শ্রমিক, ৭২ জন শিক্ষার্থী, এবং ১৭ জন স্থানীয় রাজনীতিক নেতাসহ আরও অনেকে।
যেসব কারণে ঘটেছে দুর্ঘটনা
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার ১০টি প্রধান কারণ উল্লেখ করে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা ও শারীরিক সমস্যা, ট্রাফিক আইনের অজ্ঞতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং চাঁদাবাজি। এমন অবস্থায় দুর্ঘটনা রোধে ১০ দফা সুপারিশ দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষ চালক তৈরি, চালকের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ, মহাসড়কে স্বল্পগতির যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং রেল ও নৌপথ সংস্কারের কথা।
মন্তব্য করুন