মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কাঁদছিল মেয়ে;অপহরণকারী ভেবে পিটুনি

নিউজ ডেস্ক: হঠাৎ চেরাগ পেয়ে আলাদিন বেমালুম ভুলে যায় এর ব্যবহার সীমিত। এর অপব্যবহারে ক্ষতির পরিমাণটাই যে বেশি। তেমনই আমাদের বর্তমান সমাজটা যেন ছন্নছাড়া। এমনই এক অসহায় অবস্থায় পড়তে হয়েছে এক বাবাকে।
অপহরণকারী ভেবে নিজের মেয়ের সামনেই গণপিটুনি দিল বাবাকে। পরে পুলিশ এসে মা ও বাবাকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে।
বিষয়টি দেখে একজন কুলিয়ারচর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে ফোন আসলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেল মিয়া ও রাইসাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, রাইসা সোহেল মিয়ার সন্তান। পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে রাত ৯টার দিকে সোহেল মিয়া ও তার সন্তানকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি মোতাবেক পুলিশ পদক্ষেপ নিবে কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘ঘটনাটি ভুল বুঝাবুঝির মাধ্যমে হয়েছে। জনগণতো জনগণই। কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেওয়া উচিত। আইন নিজের হাতে তোলে তো অপরাধ।’’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সোহেল মিয়া কিশোরগঞ্জ পৌরসভা এলাকার হারুয়া সওদাগর পাড়ার বাসিন্দা। সোহেল মিয়ার স্বজনেরা জানান, সোহেলের সঙ্গে প্রতিবেশী সাবিনা আক্তারের (২৫) ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। কিছু দিন হয় সোহেলকে তালাক দিয়ে চলে যান সাবিনা। সন্তান রয়ে যায় বাবার কাছে। তিন বছর বয়সি রাইসা মায়ের কাছে যেতে অস্থির। কোনো উপায় না পেয়ে রাইসাকে সঙ্গে নিয়ে সাবেক স্ত্রীর খোঁজে বের হয়েছিলেন সোহেল। ভৈরবে এক স্বজনের বাড়িতে রাইসার মা থাকতে পারেন, ভেবে কয়েক দিন আগে রাইসাকে নিয়ে সেখানে যান কিন্তু তাকে পাননি। রবিবার (১৩ এপ্রিল) ভৈরব থেকে বাড়ি ফেরার সময় আগরপুর বাসস্ট্যান্ডে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হন তিনি।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করার পর কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত সোহেল মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মন্তব্য করুন