ভিডিও বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

ঝড়ে বিধ্বস্ত ভূমিহীনের ঘর খোলা আকাশের নিচে বাস

ঝড়ে বিধ্বস্ত ভূমিহীনের ঘর খোলা আকাশের নিচে বাস। ছবি : দৈনিক করতোয়া

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : নিভৃৃত অঞ্চলের বাসিন্দা মুক্তা রানী (৪৬)। হয়েছেন স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন। নিজের নেই জায়গা জমি। আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের ভিটায়। সেখানে একটি জরাজীর্ণ ঘরে সন্তান নিয়ে বসবাস। কাটে দুর্বিষহ জীবনযাপন। এরই মধ্যে ঝড়ে হাওয়ায় উড়ে গেছে তার সেই ঘরের চালা। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস এই ভূমিহীনের।

আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরের দিকে এমনি এক অদ্ভুত চিত্র দেখা গেছ- গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বোয়ালীদহ গ্রামে। এখানে উড়ে যাওয়া ভাঙা ঘরে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিলেন ভূূমিহীন মুক্তারানী। চরম হতাশায় যেন আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠছে তার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বোয়ালীদহ গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের মেয়ে মুক্তা রানী। তরুণী বয়সে বিয়ে হলেও সেই সংসার টিকেনি তার। এরপর কয়েক বছর পর ফের বিয়ে হয় পাশের উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি এলাকায়। সেখানে কোলজুড়ে জন্ম হয় একটি ছেলে সন্তান। এরই মধ্যে দ্বিতীয় স্বামী আরেকটি বিয়ে করেন। তখন থেকে স্বামী বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকছেন বাবার গ্রামের এলাকায়।

পৈত্রিক সূত্রে কোন সহায় সম্বল বা জমিজমা না থাকায় আশ্রয় নেন অন্যের জমিতে। সেখানে একটি মাটির ঘর স্থাপন করে একমাত্র ছেলেকে (৪) নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তবে বাঁশঝাড়ের মধ্যে এ বাড়িতে নেই কোন টিউবয়েল ও টয়লেট সুবিধা। জন প্রতিনিধিদের কাছে পান না কোন সহায়তা। জীবিকার তাগিতে বিক্রি করেন কচুশাক। এ থেকে কোনমতে জীবিকা চলে তার। কোলের শিশুকে নিয়ে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ঘরে একটু ভালোভাবে ঘুমাবেন তাও হয় না।

আরও পড়ুন

জঙ্গলের ভেতরে জরাজীর্ণ ঘরে নির্ঘুম রাত কাটে এই ভূমিহীন নারীর। কয়েকদিন আগে রাতের বেলায় হঠাৎ তুফান এসে সব কিছু তছনছ করেছে। উড়ে গেছে সেই মাটির ঘরের চালা। নেই খাবারের ব্যবস্থাও। এখন কি হবে কই যাবে, সব শেষ হয়ে গেছে তার।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মুক্তা রানী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘স্বামী ছাড়া হয়ে সন্তানকে নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি। অন্যের জমিতে একটি ঘর তুলে বসবাস করতাম। সেটাও আবার বাতাসে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মেলেনি প্রশাসনের কিংবা জন প্রতিনিধিদের সহায়তা। সরকারিভাবে আমাকে একটি যদি আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয়তো কিছুটা আরামে থাকতে পারতাম।’

ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য জিল্লুর রহমান জানান, ‘মুক্তা রানীর ঘরের চালা উড়ে গেছে সেটি জানা নেই তার। খতিয়ে দেখে তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করবেন। সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ময়নুল হক বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তা রানীর ব্যাপারটি স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়া হবে। সম্ভব হলে তাকে সহযোগিতা করা যেতে পারে।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে রিসোর্টে লেকে ডুবে ছেলের মৃত্যু

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মোদিন মোল্লা নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের

রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

ওয়ালটনের পণ্য কিনে ক্যাশ ভাউচার বুঝে পেলেন বিজয়ীরা

তিন দেশ থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা

ঝড়ে বিধ্বস্ত ভূমিহীনের ঘর খোলা আকাশের নিচে বাস