ভিডিও বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

খরস্রোতা ধরলা-বারোমাসিয়া নদীর বুকে বোরো ও ভুট্টাক্ষেতে সবুজের সমারোহ

খরস্রোতা ধরলা-বারোমাসিয়া নদীর বুকে বোরো ও ভুট্টাক্ষেতে সবুজের সমারোহ। ছবি : দৈনিক করতোয়া

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে খরস্রোতা ধরলা-বারোমাসিয়া নদীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর বুকে জেগে ওঠা চরগুলোতে এবার বোরো ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেছেন কৃষক। জেগে ওঠা ওই চরাঞ্চলের চারদিকে সবুজ ফসলেই ভরে গেছে।

এ যেন সবুজের এক সমারোহ। এতে করে  জীবন জীবিকা নির্বাহ জন্য বাড়তি আয় কৃষকের ঘরে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ মাত্র এক থেকে দেড় যুগ আগেও পানির প্রবাহ ও প্রাণের স্পন্দন ছিল ধরলা ও বারোমাসিয়া নদীতে। এসব নদীর প্রবল স্রোতের কারণে আঁতকে উঠতো তীরবর্তী হাজারও বাসিন্দা।

এখন পানি না থাকায় ধরলা-বারোমাসি নদীতে ছোট বড় প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে জীব বৈচিত্র্যের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শুধু ধরলা ও বারোমাসি নদীতে নয়, এই দুই নদী সংলগ্ন নীলকমলসহ আশেপাশের সকল নদ-নদীর বুকেও শত শত বিঘা জমিতে কৃষকরা একই ফসল চাষাবাদ করছেন।

প্রতি বছরে একবার এসব নদ-নদীর বুকে চাষাবাদ করে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এলেও নদীতে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী জেলে পরিবারগুলো কঠিন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ধরলাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বোয়াল, কাতলা, রুই, টেংরা, কর্তি, ভেটকি, বৈরালীসহ নানান প্রজাতির মাছ শিকার করে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন।

পানি প্রবাহ না থাকায় এসব মাছের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। ধরলা পাড়ের সোনাইকাজী এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম ও স্বপন মিয়া জানান, এক সময় এই ধরলা নদীই আমাদের ঘর-বাড়ি, আবাদি জমি-জমাসহ সব কিছুই গিলে নিয়েছে। সেই ধরলা এখন শুকিয়েছে। অনেকেই ধরলার আগ্রাসী রূপ দেখেছে। ধরলার তীব্র ভাঙনে অনেকেই নি:স্ব হয়েছেন। এখন আমরা প্রতিবছর ধরলার বুকে জেগে উঠা পলিমাটিতে ৪ থেকে বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ করছি। এ বছর বোরোর বাম্পার ফলন দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

জেলার পাড়ার লাংগা মাঝি জানান বারো মাসে ধরলা ও বারোমাসিয়া, নীলকুমার নদীতে ডিঙি নৌকা দিয়ে মাছ ধরেছি। সেই মাছ বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের জীবন জীবিকা চালিয়ে আসছি। এখন নদীগুলোতে পানি শূন্য। দেশি মাছ নেই। কি করে সংসার চালাই, চিন্তায় পড়েছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ১৫০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ১০ হাজার ২০৫। এর মধ্যে ধরলা-বারোমাসিয়া নদীর অববাহিকায় বোরো চাষাবাদ হয়েছে ১৫ হেক্টর।

সেই সাথে এ উপজেলায় ২ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে এবং ধরলা-বারোমাসিয়া নদীর বুুকে ১ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে। ভুট্টা কর্তন চলমান রয়েছে। গত বছরের ন্যায় এ বছর বোরো ও ভুট্টার ফলন ভালোই দেখা যাচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূল থাকলে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিনামূল্যে ১০০ জনের থ‍্যালাসেমিয়া টেস্ট করালো "বাঁধন" জবি ইউনিট

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি রবি গ্রেফতার

খরস্রোতা ধরলা-বারোমাসিয়া নদীর বুকে বোরো ও ভুট্টাক্ষেতে সবুজের সমারোহ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পার্টনার ফিল্ড স্কুলে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চাষাবাদে সুফল পাচ্ছে চাষিরা

বগুড়ার শেরপুরে গাছ পড়ে ভেঙে গেছে ঘর, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলো দুই শিশু

বগুড়ার ধুনটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে কসাইখানায় মাংস বিক্রি বন্ধ