তিন ভাই গ্রেফতার
বগুড়ায় আদালত, চিকিৎসক ও সিআইডি’র নাম ব্যবহার করে ভয়ানক প্রতারণা

স্টাফ রিপোর্টার : সিআইডি’র হাতে ধরা পড়েছে ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের তিন সদস্য, তিন ভাই লিখন মিয়া, রানা মিয়া ও সুমন মিয়া। আদালত, সিআইডি, চিকিৎসক এইসব নাম ব্যবহার করে বাবা হত্যার বিচার চাওয়া তাছলিমা আক্তার নামে এক নারীর কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নেয় দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা। সেইসাথে আরও তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে ফন্দি আঁটে। কিন্তু তার আগেই সিআইডি’র জালে আটকা পড়ে প্রতারক এই তিন ভাই। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকাও। বগুড়ার গাবতলীতে এই প্রতারণার ঘটনা ঘটে। গ্রেফতারকৃত তিনভাই মো. লিখন মিয়া (৩৩), মো. রানা মিয়া (৩০) ও মো. সুমন মিয়া (২৮) গাবতলী উপজেলার কালাইহাটা সরকার পাড়ার আব্দুল মজিদ সরকারের ছেলে।
সিআইডি বগুড়ার বিশেষ পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন জানান, বাবা হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন তাছলিমা আক্তার। বিশ্বাস করেছিলেন পরিচিতদের কথায়। ভেবেছিলেন, তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাবেন। কিন্তু তার ভরসার মানুষরাই প্রতারক তা তিনি জানতেন না। তাকে সহযোগিতার কথা বলে প্রতারক ওই তিনভাই তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা। বাড়ির গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং সর্বশেষ সম্বল বাড়ির ১৭ শতক জায়গা বিক্রি করে পর্যায়ক্রমে এই টাকাগুলো তাদের হাতে তুলে দেন তিনি।
এই পুলিশ সুপার আরও জানান, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গাবতলী থানায় তাছলিমার বাবা মাসুদ ফকিরকে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয় থানা পুলিশ। কিন্তু চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে চেষ্টা করতে থাকেন তাছলিমা। একটু সহযোগিতা পেতে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের কাছে ছুটতে হয় তাকে। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় লিখন মিয়া এবং লিখনের দুই ভাই রানা মিয়া ও সুমন মিয়া। তারা প্রতারণার জাল বিছায়। মামলা নারাজি, কবর থেকে তার বাবার লাশ উত্তোলন, আদালতের বিচারকের আদেশ, মেডিকেলের চিকিৎসকের সনদ তোলার জন্য খরচের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে তাছলিমার কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নেয় দুই লাখ পাঁচ হাজার। শুধু তাই নয়, তার কাছ থেকে আরও তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে ফন্দি করে। এই প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে সিআইডি বগুড়ার একটি দল অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধানে প্রমাণ মিললে গত ২৩ এপ্রিল ওই তিন ভাইকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকাও। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছে তারা।
আরও পড়ুনএ ঘটনায় সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন। গতকাল গ্রেফতার তিন ভাইকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন