আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেব না ভুলিতে—মনে অপার দুঃখ নিয়ে গেয়েছিলেন কবি নজরুল। তবে তার লেখা গান সত্যি হয়েছে। তাকে সত্যিই ভোলা যায় না। অস্তিত্বে মিশে আছেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জ্যৈষ্ঠ) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে (১১ জ্যৈষ্ঠ) বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
কাজী নজরুল ইসলাম চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সর্ম্পককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ বছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ : বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ।’
জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ সম্প্রচার করবে।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার জাতীয়ভাবে নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। সম্মানীয় বক্তা কবির নাতনি খিলখিল কাজী। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কবির মাজারে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে। ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।
নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, ছায়ানট, চ্যানেল আই জাতীয় কবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।