ভিডিও

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে অনুমোদন ছাড়াই ফিলিং স্টেশন চালানোর অভিযোগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ০৫, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০৫, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ফিলিং স্টেশনের মতো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব বিক্রেতাদের নেই বিষ্ফোরক লাইসেন্স ও ফায়ার অনুমোদন। ব্যস্ত সড়কের পাশে বিভিন্ন রকমারি দোকানের পাশে সাজানো হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার। এতে যেকোন সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

অনুমোদন ছাড়াই মেশিনে জ্বালানি তেল বিক্রির বিষয়ে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকার বাঙালি ব্রিজের পূর্ব পাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় মেসার্স পারুল এন্টারপ্রাইজ এবং সারিয়াকান্দি জামিয়া ছিদ্দিকিয়া ক্বওমী মাদ্রাসা ও ট্যালেন্ট আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুলসংলগ্ন মেসার্স লোপা এন্টারপ্রাইজ সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে স্টোরেজ ট্যাংক এবং ডিসপেন্সিং ইউনিট বসিয়ে অবৈধভাবে পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রি করছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি তেল কোম্পানির অনুমোদন না নিয়ে, বিষ্ফোরক ও ফায়ার অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে মেশিনে জ্বালানি তেল বিক্রি করছে। এতে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অগ্নিকান্ড ও হতাহতের ঘটনা।

এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর বাজারে ইকবাল হোসেনও অনুমোদন ছাড়াই মেশিনে জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। এদিকে কোন প্রকার সরকারি নির্দেশনা না মেনেই উপজেলার পৌর এলাকার মেইন সড়কের পাশে একাধিক দোকানে অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি।

উপজেলার পৌর এলাকার কালিতলা নৌঘাটে, কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা বাজারে, কামালপুর ইউনিয়নের কড়িতলা বাজারে, হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া ও নিজবলাইল বাজার এবং নারচী, ছাইহাটা, জোরগাছা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অবাধে ড্রামে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল।

এসব বাজারের একাধিক মুদিখানার দোকানসহ বিভিন্ন রকমারি দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার, যা কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মেইন সড়কে রাখা হয়েছে। সরেজমিন মেসার্স পারুল এন্টারপ্রাইজ তেলের পাম্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দু’টি মেশিনে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল।

এ প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটর হারুন-অর রশিদকে না পেয়ে তাকে ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। পাম্পের দায়িত্বে থাকা আছাব্বর মিয়া জানালেন, এ পাম্পের বিষ্ফোরক অনুমোদন রয়েছে, ফায়ার অনুমোদন অনেক আগের। তবে সেটি নবায়ন করার জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

মেসার্স লোপা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী লোকমান হোসেন জানান, তার বিষ্ফোরক লাইসেন্স আছে কিন্তু সেটা অনেক আগের। তবে তিনি জানান, গত কয়েক বছর আগে তিনি ফায়ার অনুমোদন নিয়েছেন।  কুতুবপুরের ইকবাল হোসেন জানান, তিনি মেশিনে তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

বিস্ফোরক লাইসেন্স কর্তৃপক্ষ রাজশাহী অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মেসার্স পারুল এন্টারপ্রাইজকে বিষ্ফোরক লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে কিন্তু তিনি শুধু ড্রামে করে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে পারবেন, মেশিনে তেল বিক্রি করতে পারবেন না।

মেসার্স লোপা এন্টারপ্রাইজকে বিষ্ফোরক লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে কি না সেই তথ্য অফিসে নেই। তবে গত ৫ মে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বিস্ফোরক পরিদপ্তর থেকে বেআইনিভাবে ডিসপেন্সিং ইউনিট স্থাপন করে পেট্রোলিয়াম দ্রব্য মজুদ ও সরবরাহের জন্য কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

ফুলবাড়ি আমতলী গ্রামের মেসার্স মুশফিকুর ফিলিং স্টেশনের সত্ত্বাধিকারী আতাউর রহমান বলেন, বিস্ফোরক, ফায়ার এবং ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা সরকারের ঘরে জমা দিয়ে আমরা ব্যবসা করছি। আর সরকারের অনুমোদন ছাড়াই সরকারের মোটা অঙ্কের টাকা ফাঁকি দিয়ে কীভাবে মেশিনে জ্বালানি তেল অবাধে বিক্রি করে তা বোধগম্য নয়।

সারিয়াকান্দির উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান দৈনিক করতোয়া‘কে বলেন, সবেমাত্র এ উপজেলায় যোগদান করেছি। অভিযোগটি এখন ও হাতে পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS