ভিডিও শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে বিএনপি নেত্রীর মামলা

রাজশাহীতে ১০ পুলিশসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে বিএনপি নেত্রীর মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে সাত বছর আগের ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্যসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন জেলা মহিলা দলের এক নেত্রী। রাজনৈতিক কারণে বাসায় অভিযানের নামে ভাঙচুর, শারীরিকভাবে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে। গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ -এ মামলাটি দায়ের করেন রাজশাহী জেলা মহিলা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক লাইলা সুলতানা লিজা।

মামলার বাদির আইনজীবী মাহমুদুর রহমান বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের ১৭ মার্চ।

মামলায় যে ১০ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন নগরের বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন, তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম, মো. শাহিন, বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ মো. মনির, কনস্টেবল হৃদয় কুমার, আনোয়ার, আফাজ, সাবিনা ও রুমিনা। মামলার অন্য ৪২ আসামির মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের ৯নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. টুলুর নামও আছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়, মামলার বাদি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিগত সময়ে তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা ও নাজেহাল করার চেষ্টা করতেন। বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ওসি ও পরিদর্শক তাকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর জন্য এবং ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে লাইলা সুলতানা ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যান। তখন ওসি শাহাদত হোসেন জিডি না নিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

মামলার আরজিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনার জেরে ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তৎকালীন ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য লাইলা সুলতানার পৈতৃক বাড়িতে গিয়ে তাকে টানাহেঁচড়া করে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসেন। অন্য আসামিরা বাড়িটে ভাঙচুর করতে থাকেন।

তৎকালীন ওসি শাহাদত লাঠি দিয়ে লাইলার মাথায় আঘাত করলে গুরুতর জখম হয়। এতে তার মাথায় পাঁচটি সেলাই দিতে হয়। পুলিশ পরিদর্শক সেলিম বাদশা লাঠি দিয়ে লাইলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। আসামি মনির তাকে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করেন।

আরও পড়ুন

এসময় লাইলার বোন শামীমা সুলতানা তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাকেও মারধর করেন। প্রায় ৩০-৪০ মিনিট ধরে অন্য আসামিরা লাইলার বাড়িতে ভাঙচুর চালান। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘটনার পর লাইলাকে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল থেকে তাকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, তৎকালীন ওসি শাহাদত হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের সাথে নিয়ে লাইলাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন ও তার বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। ওই সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও আসামিরা তার চিকিৎসার কাগজপত্রও তাকে দেননি। পরে লাইলা জামিন পেলে আসামিরা আবারও নানাভাবে হুমকি দেন। রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় আসামিদের ভয়ে এত দিন মামলা করতে পারেননি লাইলা।

লাইলা সুলতানার বিরুদ্ধে করা একটি মাদকের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন এসআই মো. শাহিন। তিনি বর্তমানে রাজশাহী নগরের এয়ারপোর্ট থানার ওসি।

তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার (লাইলা) নামে মাদকের সাতটি মামলা হয়েছে। তিনি একজন মাদক ব্যবসায়ী। এখন তিনি মামলা করতেই পারেন। তবে মামলায় পুলিশ ছাড়া অন্য যাঁদের নাম আছে, তারাই সেদিন মাদকসহ তাকে আটক করেছিলেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন বছরকে গ্রাহকদের সাথে নিয়ে স্বাগত জানালো সেইলর 

গ্রাহকদের সাথে নিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানালো সেইলর

ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রংপুর

খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

খুলনায় বৈষম্যবিরোধীদের ওপর হামলায় নারীসহ আহত ৮, দু’জন আইসিইউতে

সরকারি দফতরে তদবির বন্ধে সচিবদের কাছে তথ্য উপদেষ্টার চিঠি