গাবিন্দগঞ্জে

ভেঙে যাওয়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় শঙ্কিত নদীপাড়ের মানুষ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩, ০৮:০৯ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩, ০৮:০৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া, কাটাখালী, বাঙ্গালী নদীর উভয় পাশের ভেঙে যাওয়া ৩৫ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশ মেরামত এখনও মেরামত হয়নি। এ কারণে আসন্ন বন্যায় দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ। স্থানীয়রা জানায়, বাঁধ সংস্কার না হলে আসন্ন বন্যার পানির স্রোতে বসতবাড়ি, ফসলসহ আবাদি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নদীগর্ভে বির্লীন হয়ে যেতে পারে।

আর বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত করতোয়া, বাঙ্গালী, কাটাখালী নদীর বগুলাগাড়ী হতে চর নামাপাড়া ১৫ কি.মি. এর মধ্যে ২১৫০ মিটার, বিষপুকুর হতে নয়াপাড়া বালুয়া পর্যন্ত ৯ কি.মি. এর মধ্যে ৪৫০ মিটার, কাটাখালী সোহাগী হতে মালাধর ফতেল্লাপুর ৫ কি.মি.এর মধ্যে ২ কি.মি. বালুয়াবাবুর বাজার হতে দেওয়ানতলা পর্যন্ত ৬ কি. মি. এর মধ্যে ৮৫০ মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই সাহেবগঞ্জ, মেরী, সাতানাবালুয়া, গোসাইপুর, চানপুর খলসী, সমছপাড়া, পুতাইর বোচাদহ, সোনাইডাঙ্গা, রঘুনাথপুর, বগুলাগাড়ী এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়বে বিভিন্ন ফসল।

ইতোপূর্বে বগুলাগাড়ী থেকে বড়দহঘাট এবং ফুলহার থেকে ত্রিমোহিনী পর্যন্ত বাঁধের বিভিন্ন স্থান বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে যায়। মেরামতের আশ^াস দিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এলেও ভেঙে যাওয়া অংশগুলো সংস্কার না করায় প্রতি বছর এসব এলাকার মানুষজনকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এছাড়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের তরফমনু পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি ঢুকে প্রতি বছর গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর ভায়া ঘোড়াঘাট মহাসড়ক হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়।

স্থানীয়রা বার বার দাবি জানালেও বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। সাপমারা ইউনিয়নের চক রহিমাপুর গ্রামের মানিক মিয়া বলেন, ২০১৮ সালের বন্যায় করতোয়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের চকরহিমাপুর পয়েন্ট  ভেঙে য়ায়। সে সময় এই গ্রামের অনেক বাড়িঘরের ক্ষতি হয়। অনেক জিনিষ পত্র বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এখন প্রতি বছরই বন্যা এলেই বাড়িঘরে পানি ঢুকে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে।

দরবস্ত ইউনিয়নের গোশাইপুর গ্রামের মোজফ্ফর হোসেন, সাতানা বালুয়া গ্রামের সাহারুল , আব্দুর রাজ্জাক সকলের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের মেরামত করার। গেবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গাইবান্ধাকে অবহিত করেছি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল লতিফ প্রধান বলেন, গোবিন্দগঞ্জের কাটাবাড়ি থেকে শুরু করে শালমারা পর্যন্ত  নদীর  উভয় পাশে বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সে সব স্থান দ্রুত মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে বন্যার আগেই মেরামত সম্পন্ন হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়