স্বাভাবিক বলছেন খামারিরা
স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার বাজারে গত এক সপ্তাহ হলো অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে সব ধরনের পোল্ট্রি পণ্যের দাম। চাহিদার তুলনায় যোগান ঘাটতির অজুহাতে বাজারে এসব পণ্যের দাম হঠাৎ-ই বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। গত কয়েক দিনে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া একই সময়ে ব্যবধানে ডিমের হালিতে বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত।
আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারসহ বেশিরভাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত কয়েক দিন আগেও ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়াও ককরেল মুরগি প্রতি কেজি বর্তমানে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত কয়েক আগেও ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়।
পাশাপাশি প্রতি হালি লাল ডিম দাম বেড়ে ৪৪ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়, যা গত তিন আগে ৪০ টাকা এবং এক সপ্তাহ আগে ৩৪ টাকায় বিক্রি হয়। পোল্ট্রি পণ্যের হঠাৎ এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে মুরগি ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহর বেশি হলো বাজারে ব্রয়লার, ককরেল, সোনালীসহ বেশিরভাগ মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় মূলত হঠাৎ করে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী বকুল হোসেন বলেন, বাজারে পোল্ট্রি পণ্যে ভোক্তার যে চাহিদা সেই অনুপাতে সরবরাহ একেবারেই কম। আর এর প্রভাবেই ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। প্রতি বছরের এ সময় পোল্ট্রি পণ্যের দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলছেন, শীতের পরপরই মূলত দেড়-দু’মাস এসব পণ্যের দাম বাড়ে পরে আবার আস্তে আস্তে তা স্বাভাবিক হয়ে আসে। এর প্রভাবে দেশি হাঁস-মুরগির দামও বেড়েছে।
বগুড়া সদর এলাকার খামারি সোহাইনুর রহমান বলেন, শীতকালে ঠান্ডার কারণে ছোট ছোট অনেক খামারি মুরগি তুলতে ভয় পান। কারণ শীতকালে মুরগিতে রোগ-বালাই বেশি হয়। এতে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সাময়িক ঘাটতি তৈরি হওয়ায় এ সময় পোল্ট্রি পণ্যের দাম বাড়ে। প্রতি বছরই এমন হয় জানিয়ে এই ব্যবাসয়ী বলছেন, বর্তমানে ডিম ও মুরগি উৎপাদনে যে খরচ তাতে এমন দাম থাকলেই খামারিরা লাভবান হবেন না হলে ছোট ছোট খামারির লোকসানে পড়ে তাদের উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হবেন, লোকসানে পড়ে ইতিমধ্যে অনেক খামারি তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন।
আরেক খামারি নূর ইসলাম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে দফায় দফায় পোল্ট্রি ফিডের দাম বাড়ছে অথচ সে তুলনায় ডিম ও মুরগির দাম বাড়েনি। মাঝে মাঝে সিন্ডিকেট করে দিন কয়েকের জন্য দাম বাড়লেও তাতে লাভবান হয় কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা আর এতে সব সময়ই ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সাম্প্রতিক পোল্ট্রি পণ্যের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে এই খামারি বলেন, মূলত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ঘাটতির কারণেই দাম বেড়েছে।
খামারিদের জন্য শীতকালীন সমস্যা ও ধারাবাহিক মুরগির খাবারের দাম বাড়ার কারণে অনেক খামারি তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।