স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ২০২০ সালে অনুমোদিত নতুন আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাতিল করলেও বগুড়ায় ‘বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আশা শেষ হচ্ছে না। ২০০১ সালের বগুড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আইনে বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। এখন রাজনৈতিক তদবীর যত জোড়ালো হবে বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা তত উজ্জ্বল হবে।
প্রায় ২২ বছর আগে বগুড়ায় ‘বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে আইন প্রনয়ন করা হয়। এ বিষয়ে গ্যাজেট হলেও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উদাসীনতায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের কোন অগ্রগতি হয়নি। ২২ বছর আগে ২০০১ সালে বগুড়ায় বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সরকার।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০১ সালের ১৫ জুলাই প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বর্তমান প্রাগ্রাসর বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষা ও আধুনিক জ্ঞানচর্চা, বিশ্লেষণ করিয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব প্রদানসহ পঠন-পাঠন ও গবেষনার সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ কল্পে বৃহত্তর বগুড়া জেলার জামালপুর নামক স্থানে‘ বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়” নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা আইন করা হইলো।
এই আইন বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ নামে অভিহিত হবে। সে সময় স্থান নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করা হলেও পরবর্তীতে আর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রকল্প কর্মকর্তা বা ভিসি নিয়োগ না করায় একই সাথে প্রকল্পের বিপরীতে কোন অর্থ বরাদ্দ না করায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প ভেস্তে যায়। ২০০১ সালে মহান জাতীয় সংসদে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আইন পাশ হয়েছে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এই আইনে স্বাক্ষর করেছেন।
২০০১ সালের পর আবার ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি সচিবালয়ে মন্ত্রীসভার নিয়মিত বৈঠকে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২০ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়। ২০০১ সালের করা আইন ওই বছরের ১৫ জুলাই গেজেট হয়। ওই গেজেট বাতিল না করে ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২০ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়।
একই জেলায় ২০ বছরের ব্যবধানে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। ২০০১ সালের আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ করা হলেও ২০২০ সালের আইনে স্থান দেখানো হয়নি। ফলে স্থান নির্বাচন নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেয়। প্রায় ৫০ বছর পর বগুড়া সদর আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় উপ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর বগুড়াবাসী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বিষয়ে সোচ্ছার হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে জনমত জোরালো হচ্ছে।
এ অবস্থায় আজ সোমবার (১৩ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, একই স্থানে ও একই বিষয়ে দুটি আইন থাকার যুক্তিযুক্ত না থাকায় ২০০১ সালের আইনটি কার্যকর রেখে ২০১৯ সালের নীতিগতভাবে পাশ হওয়া আইনটির খসড়া বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০০১ সালের আইনটি কার্যকর রাখায় বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প জিইয়ে থাকলো।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।