কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : প্রয়োজনীয় শিক্ষক, মানসম্মত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও যমুনা নদীর ভাঙনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাশাপাশি স্থাপনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নেমেছে। এতে করে উল্লেখিত বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকরা বছরের পর বছর অলস সময় পার করছেন। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ছাড়াও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে বিদ্যালয়সমূহ থেকে কাঙ্খিত সফলতা মিলছে না।
কাজিপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীতে বিভক্ত কাজিপুর উপজেলায় ২৩৭টি বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে যমুনা নদীর পূর্বপারে চরাঞ্চলে ১১৪টি বিলে অঞ্চলে রয়েছে ১২৩টি বিদ্যালয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়সমূহে নতুন শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্তসহ মোট কর্মরত রয়েছেন ১ হাজার ৪২৪ জন শিক্ষক। শিক্ষক প্রতি ৩০ জন করে শিক্ষার্থী হিসেবে কাজিপুরে ৪২ হাজার ৭২০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও গত ২০/২১ বছরের হিসাব অনুযায়ী কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ৩০ হাজার ৩৪৩ জন। সূত্র মতে, ওই তালিকার চেয়ে শিক্ষার্থী অনেক কম।
গত ১৫ মার্চ বুধবার বিলে অঞ্চলের নদী ভাঙনকবলিত শুভগাছা ইউনিয়নের বেশক’টি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়গুলোতে কাঙ্খিত শিক্ষার্থী নেই, শ্রেণি কক্ষগুলো ধুলাবালিতে ভরা। ভাংড়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ৬ জন, ছাত্র ২ জন, নতুন আমনমিহার ২য়, ৩য় ও ৫ম শ্রেণি মিলে ৫ জন শিক্ষার্থী। এ চিত্র শুধু উল্লেখিত দুটি বিদ্যালয়েই নয়, চর ও বিলে মিলে শতাধিক বিদ্যালয়ে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে নাম না প্রকাশ করে শিক্ষকরা বলেন, আমরা পাঠপ্রদানে আন্তরিক, তবে নদী ভাঙনে বিদ্যালয়গুলো পাশাপাশি অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থীর অভাব সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া করোনাকালীন স্কুলসমূহ বন্ধ থাকায় এবং মাদ্রাসাগুলো চালু থাকার কারণেও অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালঢ থেকে ঝড়ে পড়েছে। এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রী ঝড়ে পড়লেও ভাঙন এলাকায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী বেশি থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষকগণ অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব বলে উল্লেখ করেন। অপরদিকে বেশকজন অভিভাবক সরকারী বিদ্যালয়ে পাঠপ্রদানে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
কাজিপুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান এসবের সত্যতা নিশ্চিত করে কাজিপুর অফিসে জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে জানান, যমুনায় বিভক্ত এই উপজেলায় ৯ জন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তার স্থলে আছে মাত্র একজন মহিলাসহ ৩ জন। এ কারণে প্রয়োজনীয় দেখভাল করা যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।