রাজশাহী প্রতিনিধি: বাড়িতে জায়গা না দিয়ে বৃৃদ্ধ বাবাকে একটি গণসৌচাগারে রেখেছিল ছেলেরা। খবর পেয়ে লিয়াকত আলী (৭৫) নামে ওই বৃদ্ধকে গণশৌচাগার থেকে উদ্ধার করেছে নগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকার একটি গণশৌচাগার থেকে বৃদ্ধ লিয়াকত আলীকে উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধা লিয়াকত আলীর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মিঠুর মুদিখানার ব্যবসা রয়েছে। মেজো ছেলে সুমন ও ছোট ছেলে লিমন। তারা দুই ভাই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মিস্ত্রি। বৃদ্ধ লিয়াকতের তিন ছেলেই সচ্ছল। লিয়াকত আলী পৃথক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। অসুস্থ থাকায় বাড়ির মালিক ছেলেদের তার বাবাকে নিয়ে যেতে বলেন। এতেই অমানবিক কাজ করে ছেলেরা। সকালে তাকে নিয়ে তালাইমারীর গণশৌচাগারের রেখে যায়।

সারাদিন সেখানে থাকার পর এলাকাবাসী জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধকে গণসৌচাগার থেকে উদ্ধার করে। এলাকাবাসী জানান, এক সময় বৃদ্ধ লিয়াতক আলীর জমি ও বাড়ি ছিল। তিনি সবকিছু তার ছেলে-মেয়েদের লিখে দিয়েছেন। এখন কিছুই নেই তার।

স্থানীয় নাহিদ জানান, তার ছেলেরা মোটামুটি সচ্ছল। এক ছেলে মুদি ব্যবসা করেন। অন্য দুই ছেলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মিস্ত্রি। তাদের মধ্যে একজনের নগরীর কাজলা এলাকায় দোতালা বাড়িও রয়েছে। ভুক্তভোগী লিয়াকত ও তার সন্তানরা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু বলেন, গণশৌচাগারে লিয়াকত আলীকে ফেলে রাখার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। লিয়াকতের তিন ছেলেই মোটামুটি স্বচ্চল। লিয়াকত আলীর স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বৃদ্ধ লিয়াকতের দ্বিতীয় স্ত্রী এলাকায় মানুষের বাড়ি বাড়ি ঝি এর কাজ করেন। লিয়াকত ও তার স্ত্রী একই এলাকার কমলা নামে এক নারীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

এ নিয়ে শুক্রবার বাড়ির মালিক লিয়াকতের ছেলেদের জানান, তাদের বাবা অসুস্থ, নিয়ে যেতে হবে। তখন তারা লিয়াকত আলীকে নিয়ে এসে গণশৌচাগারে বসিয়ে রেখে চলে যায়। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ছেলেরা বাবাকে গণশৌচাগারের ভেতরে ফেলে রেখে যায়।

জায়গাটা দুর্গন্ধ যুক্ত। পরে বৃদ্ধের তিন ছেলেকে ডেকে তাকে বাড়ি পাঠানো হয়। ছেলেদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি। তারা লিয়াকতকে দেখভাল করতে পারবে। ছেলেদের বলা হয়েছে- নিজেদের মধ্যে কথা বলে পালান করে বাবাকে রাখতে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।