নওগাঁসহ ১০ জেলা ২০ উপজেলায় খন মিলবে এ সুবিধা

ফি’র বিনিময়ে সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসা কার্যক্রম আজ শুরু

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩, ০৪:০৬ সকাল
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩, ০৫:৪৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার: আজ (৩০ মার্চ) থেকে সরকারি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ফি’র বিনিময়ে বৈকালিক চিকিৎসা সেবা। একজন চিকিৎসক সপ্তাহে দুদিন বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে রোগী দেখতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে দেশের ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলা হাসপাতালে এ সেবা মিলবে। প্রথম পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী জেলা নওগাঁয় এ সেবা মিললেও বগুড়ার কোন হাসপাতালেই এ সেবা মিলবে না।

সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকরা বিনামূল্যে রোগী দেখেন। এতে বিকেলে বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে না পেরে বাইরে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে দেখান। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ‘ফি’ বেশি হওয়ায় দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বহুগুণ বৃৃদ্ধি পায়। এতে সাধারণ অনেক মানুষ তাদের কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের এই সমস্যা সমাধানে পাইলটিং প্রক্রিয়ায় আজ থেকে এই সেবা চালু হচ্ছে।

এই সেবায় নির্দিষ্ট ভিজিটের বিনিময়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে সরকার। জানা গেছে, বৈকালিক এ সেবায় একজন রোগী কোনো অধ্যাপকের পরামর্শ নিলে ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া সিনিয়র কনসালটেন্ট ৪০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের চিকিৎসককে ৩০০ টাকা দিতে হবে।

রোগী দেখায় চিকিৎসককে সহায়তা করবেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্সরা। রোগী যে ফি দেবেন, তা থেকে চিকিৎসককে সহায়তাকারী নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পাবেন ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা হাসপাতাল রাখবে। রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ফি আদায় করবে হাসপাতাল, চিকিৎসকরা মাস শেষে তাদের পাওনা টাকা পাবেন।

গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস চালু করার চেষ্টা করছি। প্রাথমিকভাবে নেওয়া এই প্রজেক্ট সফল হলে পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪টি জেলা হাসপাতাল ও ৫শ’ উপজেলা হাসপাতালে এই সেবা চালু করা হবে বলে তিনি জানান।

নীতিমালা অনুযায়ী, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক সপ্তাহে দু’দিন করে নিজের রোগী দেখবেন। এক্ষেত্রে টিকিট নেওয়া যাবে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। ওই টিকিটে এক মাসের মধ্যে ফলো-আপ হিসেবে আরও একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যাবে।

অপরদিকে ১৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় করা যাবে যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের ফি থেকে অর্ধেক পাবেন চিকিৎসক। এসব অর্থ তারা দুই মাস পর হাতে পাবেন। এছাড়া টিকিট কেনার তারিখ হতে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে মোট দু’বার চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন। বিকেলের এই স্পেশালিস্ট সার্ভিসে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেলে বিশেষজ্ঞের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয় নীতিমালায়।

নীতিমালা অনুযায়ী, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বা পরিচালকরা রোগী দেখার জন্য রোস্টার চালু করবেন। প্রাথমিকভাবে প্রতি বিভাগ থেকে একজন করে চিকিৎসক নিয়ে এই রোস্টার চালু করতে পারেন তারা। এতে জাতীয় পর্যায়ের খ্যাতনামা চিকিৎসকরা অবসরের পরও বিকালের শিফটে চালু হতে যাওয়া এই কর্মসূচিতে আর্থিক সুবিধাসহ সংযুক্ত হতে পারবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রাজশাহী বিভাগের পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলা হাসপাতাল, নওগাঁর সাপাহার উপজেলা হাসপাতাল, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে এই স্বাস্থ্যসেবা চালু হচ্ছে। তবে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার কোন হাসপাতালে এই বৈকালিক সেবা চালু হচ্ছে না জানান, বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এটিএম নূরুজ্জামান সঞ্চয়।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ শফিউল আজম জানান, সরকারের এটি একটি পাইলট প্রজেক্ট। প্রাথমিকভাবে যদি সফল হয় তবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হাসপাতালে নির্ধারিত ভিজিটের বিনিময়ে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু হবে। প্রথম পর্যায়ে বগুড়ার কোন হাসপাতালেই এই সেবা চালু হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়