বগুড়ায় ‘এক মুঠো ভাতের’ জন্য যুবককে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ০৩:০১ রাত
আপডেট: মে ২৪, ২০২৩, ০৩:০১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার: ভাত চুরির অপবাদে বগুড়ায় সাব্বির হোসেন (২৩) নামে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় পেটানো হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে সদরের নিশিন্দারা ইউনিয়নের বারপুর লালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তিন মিনিটের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী তাকে নির্যাতন করছে। প্রথমে তাকে টেনে হেঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে মারপিট করা হয়।

নির্যাতনের  সময় তাকে দড়ি দিয়ে পিঠমোড়া করে বাঁধা হয়। সেইসাথে দুই পা বেঁধে রাখা হয়। এ সময় বার বার সাব্বির মাফ চাইলেও তাকে ক্ষমা করা হয়নি। প্রায় এক ঘন্টাকাল তাকে নির্যাতন করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, সাব্বির ভাত চুরির চেষ্টা করায় তাকে মারপিট করা হয়েছে। সে নেশাগ্রস্ত। তবে সাব্বিরের স্বজনরা দাবি করেন, ক্ষুধার জ্বালায় সে ‘এক মুঠো ভাতের’ একটি বাড়িতে রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করেছিল। এ জন্য তাকে বেঁধে রেখে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, বারপুর লালীপাড়া এলাকার একটি বাড়ির দোতলার রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করছিল সাব্বির। এ সময় বাড়ির লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে সে পালানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে পিছু ধাওয়া করে আটক করে। এরপর লোকজন তার হাত-পা বেঁধে তাকে এক ঘন্টা ধরে অমানুষিকভাবে  নির্যাতনের পর তাকে ছেড়ে দেয়।

কিন্তু পরদিন আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে সাব্বিরকে হাত-পা বেঁধে মারপিটের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। মাদকাসক্ত হওয়ায় বাবা-মা’হারা সাব্বিরকে কেউ খেতে দিত না। তাই সে ভাত চুরির চেষ্টা করেছিল। এ ব্যাপারে নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, চোর সন্দেহে বারপুর লালিপাড়ায় সাব্বিরকে নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। নির্যাতন না করে তারা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে পারতো। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো: স্নিগ্ধ আখতার বলেন, সাব্বিরকে নির্যাতানের ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ভিডিওটি দেখে তিনি মর্মাহত।

পশুকেও এমনভাবে কেউ নির্যাতন করে না। নির্যাতনের সময় তার নাক ও মুখে পানি ঢেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ মামলা দায়ের করেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়