বাড়তি দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারি ও কুরবানি দাতারা

বগুড়ায় কুরবানির জন্য প্রস্তুত ৭ লক্ষাধিক পশু

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ০৩:৩৮ রাত
আপডেট: মে ২৪, ২০২৩, ০৬:৪৯ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদুল আজহা আসন্ন। এই ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার খামারে খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে কুরবানির পশু। তবে গো-খাদ্যের অতিরিক্ত দামের কারণে প্রস্তুতকৃত পশুর প্রত্যাশিত দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা।

এদিকে কুরবানির পশুর দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সংকটে পড়বেন মধ্যবিত্ত কুরবানিরদাতারাও। সবমিলে চলতি বছরের কুরবানির পশু প্রস্তুতকারী ও কুরবানি দিতে আগ্রহীরা কেউ নেই স্বস্তিতে। এদিকে বগুড়ায় কুরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুতকৃত পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, এবারের কুরবানির জন্য জেলার মোট ৪৪ হাজার ৩২৯ জন খামারি তাদের পশু প্রস্তুত করেছেন। গত বছর কুরবানির জন্য পশু প্রস্তুত ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৯৫টি, এবার তা ২ লাখ ৯৯ হাজার ৩০২টি বাড়িয়ে প্রস্তুতকৃত পশুর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৯৭টি।

প্রস্তুতকৃত পশুর সাথে এবার বেড়েছে কুরবানির পশুর চাহিদাও। গত বছর পশুর চাহিদা ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৫টি, এবার তা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৪ হাজার ৪৬০টি। গত বছরের তুলনায় বগুড়ায় কুরবানির পশুর চাহিদা বেড়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫টি। চলতি বছর জেলায় কুরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুতকৃত পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে ২২ হাজার ১৩৭টি।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর জেলায় খামারের সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ১৫টি, এবছর তা ১ হাজার ৬৮৬টি কমে মোট খামার হয়েছে ৪৪ হাজার ৩২৯টি। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ পশু বেশি প্রস্তুত করে মোট প্রস্তুতকৃত পশুর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৯৭টি।

কুরবানির জন্য প্রস্তুতকৃত পশুর মধ্যে ষাঁড় রয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৯০, বলদ ৪১ হাজার ৮০৬, গাভী ৫০ হাজার ৪৫১, আর মহিষ রয়েছে ২ হাজার ৬৬০টি। মোট গবাদিপশুর পরিমাণ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৭টি। এছাড়াও ছাগল রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৫, ভেড়া ৩১ হাজার ৪৭৩টি। মোট ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮৮টি।

জেলা অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাসরিন পারভিন বলেন, গত বছরের চেয়ে বগুড়ায় প্রস্তুতকৃত পশুর সংখ্যা বেড়েছে। এবছর জেলায় যে পরিমাণ কুরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে তার চেয়ে প্রস্তুতকৃত কুরবানির পশুর উদ্বৃত্ত রয়েছে ২২ হাজার ১৩৭টি।

আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বগুড়ায় পশু প্রতিপালনের হার বেড়েছে। জেলায় যে পরিমাণ কুরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে তার চেয়েও বেশি পশু প্রস্তুত থাকায় কুরবানির পশুর কোন সংকট হবে না। প্রাণি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড ও হরমোনজাতীয় ওষুধ ব্যবহারের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করে পশু মোটা তাজাকরণের প্রবণতা আর নেই।

এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই দেশের বাজারে সব ধরনের গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। বাড়তি দামের কারণে এবারের পবিত্র ঈদ উল আযহার কুরবানির পশুর প্রত্যাশিত দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন পশু প্রতিপালনকারীরা। বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের তথ্যমতে, সাম্প্রতিক দেশের বাজারে গো-খাদ্যের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

আরও রয়েছে পশুর ওষুধের বাড়তি দাম। এতে সবমিলেই বেড়েছে পশু প্রস্তুতের খরচ। গত বছর ১শ’ কেজি ওজনের একটি গরু প্রস্তুত করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়েছিল এবার তা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ, ফলে গত বছর কুরবানির পশুর হাটগুলোতে একই ওজনের গরু যে দামে বেচাকেনা হয় এবার তা ভালোই বাড়বে বলে জানাচ্ছেন খামারিরা।

অপরদিকে গত বছরের তুলনায় কুরবানির পশুর দাম খুব বেশি বাড়লে কুরবানি দাতার সংখ্যা কমার আশঙ্কার কথা বলছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির কুরবানি দাতারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়