শাজাহানপুরে
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: সাসেক প্রকল্পের সড়ক উন্নয়ন কাজের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই চরম জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হচ্ছে বিদ্যালয় চত্বর। পানিতে ভিজে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয় প্রায় ২শ’ কোমলমতি শিক্ষার্থীকে।
কাদা পানিতে পা পিছলে বই-পুস্তক ও জামা কাপড় ভিজে যাওয়ায় কেউ কেউ মন খারাপ করে ফিরছে বাড়িতে। বিদ্যালয় চত্বরে জাতীয় সমাবেশ ও খেলাধুলার পরিবেশ না থাকায় উৎসাহ হারিয়ে বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা।
গত দুই বছর যাবত এমনই নাজুক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া-রহিমাবাদ সরকারি বালক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। ভুক্তভোগী রওশন আক্তার নামের এক অভিভাবক জানিয়েছেন, তার ছেলে ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার বিষয়ে বেশ আগ্রহী।
চলতি বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয় মাঠে হাঁটু পানি জমে থাকায় তার ছেলে কাদা পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে চায় না। একদিন সে পা পিছলে পড়ে কাদা পানিতে বই-পুস্তক ও জামা কাপড় ভিজে ফেলেছিল। সেদিন তার আর স্কুলে ক্লাস করা হয়নি।
এরপর থেকে বৃষ্টি হলে সে আর স্কুল মুখী হতে চায়না। অপর এক অভিভাবক ফাতেমা খাতুন জানান, তার ছেলে সৌরভ হাসানও ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। শুষ্ক মৌসুমে স্কুল মাঠে জাতীয় সমাবেশ, খেলাধুলার সুযোগ ছিল।
তাই আনন্দের সাথে প্রতিদিন স্কুলে যেত। এখন স্কুল মাঠে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় সৌরভ বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিনা আক্তার জানিয়েছেন, তার বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি ক্লাসে প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বর্ষায় বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রাত্যহিক জাতীয় সমাবেশ ও স্কুল মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক সকলকে কাদা পানিতে ভিজে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্কুলে যাতায়াত কষ্টসাধ্য হওয়ায় শিশুরা স্কুল বিমুখ হয়ে পড়ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনসহ বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে রাস্তা তৈরি করতে হবে।
এজন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খালেদা খানম জানিয়েছেন, বিদ্যালয় মাঠে কখনই জলাবদ্ধতা সমস্যা ছিলনা।
বিগত ২ বছর যাবত সাসেক প্রকল্পের আওতায় মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজ শুরু হওয়ায় রাস্তার নিচ দিয়ে থাকা পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে যায়।
সেই সাথে রাস্তার চেয়ে স্কুল মাঠ নিচু হয়ে পড়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতের অর্থ দিয়ে স্কুল ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম জানিয়েছেন, তিনি নিজেও ওই স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতার খবর জেনেছেন। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানে তিনি উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।