তিন হাজার কোটি টাকা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

সিরাজগঞ্জে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ৪ লাখ পশু

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ১০:৫২ রাত
আপডেট: মে ২৪, ২০২৩, ১০:৫২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

জয়নাল আবেদীন জয়, সিরাজগঞ্জ: কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড় খামারে মোটাতাজা করা হচ্ছে প্রায় ৪ লাখ পশু। দিনরাত এসব পশুর বাড়তি যত্ন আর লালন পালনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও শ্রমিকরা। প্রতি বছর এ জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিরাট অংশের কোরবানির চাহিদা পুরণ করা হয় এখানকার পশুতে।

এবার এ জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু ক্রয়-বিক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। জানা গেছে, গবাদিপশু সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জে প্রতি বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিক্রির জন্য গবাদিপশু মোটাতাজা করে খামারিরা।

এবারও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ছোট বড় খামারি হরেক রকম প্রজাতির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা মোটাতাজা করেছে।

কোরবানির ঈদে তারা এসব গবাদিপশু বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি আয় করবে। খামারিরা নিজ বাড়ি ও খামারে বছরজুড়ে পশুগুলো লালন পালনের মাধ্যমে মোটাতাজা করেন।

প্রাকৃতিভাবে বেড়ে ওঠা সবুজ ঘাস খাইয়ে এখানকার পশু মোটাতাজা করা হয় বলে এর চাহিদা দেশজুড়ে। ছোট বড় গবাদিপশুর খামারের মাধ্যমে এ জেলার হাজার হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান ও আয়ের পথ তৈরি হয়েছে।

ছোট ছোট খামারের পাশাপাশি এখানে বড় বড় খামারও গড়ে উঠেছে। যেখানে বিনিয়োগ করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এসব খামারে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অনেকের। একই সাথে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম পর্যায়ে গড়ে ওঠা ছোট ছোট খামারে এক থেকে ৪টি করে ষাঁড়, ছাগল, ভেড়া মোটাতাজা করে নিম্ন আয়ের ছোট খামারি।

তারা মাসজুড়ে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে আয় করে এসব গবাদিপশুর গো-খাদ্যের যোগান দেয়। বাড়ির গৃহিণীরা এসব পশু লালন-পালন করে।

কোরবানির ঈদে হাট বাজারে এসব পশু বিক্রি করে বছরে তারা ভাল টাকা আয় করে থাকে। এটাই তাদের আয়ের একমাত্র অবলম্বন। এভাবে ছোট থেকে বড় খামারিরা গবাদিপশু মোটাতাজা করণের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। এভাবে তারা নিজেরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, পাশাপাশি এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতিকে করেছে গতিশীল ও সমৃদ্ধ।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে আসন্ন কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য জেলার বিভিন্ন খামারে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬টি গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ৭১ হাজার ৭১২টি, মহিষ ১ হাজার ৪০৫টি, ছাগল ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৬৬টি ও ভেড়া ৬০ হাজার ১৩৩টি। এ জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬০ হাজার।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু সারাদেশে চলে যাবে। কোরবানির ঈদের আগে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দূর-দূরান্তের পাইকার এসে গবাদিপশু কিনে নিয়ে যায়। সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে অবস্থিত আরাভ এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান সিহাব জানান, তাদের খামারে দেশি-বিদেশি মিলে শতাধিক ষাঁড়, মহিষ, ছাগল, দুম্বা মোটাতাজা করা হয়েছে। তাদের খামারে লাখ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা দামের পশু মোটাতাজা করা হয়েছে।

যার বেশিরভাগ পশু খামার থেকেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া তারা সারা বছরই পশু মোটাতাজা করে বিক্রি করে থাকে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানান, আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলার খামার পরির্দশন করে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ওষুধপত্র দিচ্ছি। এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু ক্রয় বিক্রয় হবে বলে আমরা আশা করছি।

ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা জেলার  বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে কথা বলেছি। প্রতিটি হাটে ব্যাংকের লোকজন থাকবে। গবাদিপশু ক্রেতা এবং বিক্রেতারা যে কোন ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট এবং কিউআর কোড ব্যবহার করে ই-ব্যাংকিং লেনদেন সেবা গ্রহণ করতে পারবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়