রফতানি হচ্ছে বিদেশে কচুরলতি চাষে লাভবান পাঁচবিবির কৃষকরা

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৩, ০৮:২৫ রাত
আপডেট: মে ২৬, ২০২৩, ০৮:২৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

বাগজানা (পাঁচবিবি) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে কচুর লতি। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এর চাষ বাড়ছে। পাঁচবিবির কচুরলতি কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।

ফলে এ অর্থকারী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে দারুণ অবদান রাখছে। আর অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকরা। জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ হাজার টাকায়। প্রতি বিঘা জমিতে সপ্তাহে ৩-৪ মণ কচুরলতি পেয়ে থাকে কৃষকরা।

বৃষ্টি হলে সপ্তাহে দুইদিন লতি কাটতে হয়। এখন বৃষ্টি কম হওয়ায় সপ্তাহে একদিন করে কাটতে হয়। গোড়াা থেকে যে লতি বের হয় সেটি চিকন এবং ডাগুর থেকে যে লতি বের হয় সেটি মোটা ধরনের লতি। বাজারে প্রতিকেজি লতি ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঁচবিবি উপজেলা কচুর লতির জন্য বিখ্যাত। উপজেলায় এবার অনেক অল্প সংখ্যক চাষী লতির আবাদ করেছে। তাই মৌসুমের শুরুতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এই কচুরলতি।

রামচন্দ্রপুর গ্রামের সুবাস বলেন, “আমি এবার ১৫ কাঠা জমিতে কচুর লতি আবাদ করেছি। অনাবৃষ্টির কারনে সপ্তাহে একদিন করে লতি সংগ্রহ করা হচ্ছে। বৃষ্টি থকলে সপ্তাহে দুইদিন করে কাটতে হতো। পাইকাররা এসে আমার বাড়ি থেকে লতি ৪০ টাকা কেজি দরে লতি নিয়ে যাচ্ছে,পাঁচবিবির বালিঘাটা ইউনিয়নের বটতলী লতিহাটিতে।

এবং সেখান থেকে ঢাকার কাওরান বাজারসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে এই কচুর লতি যায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। আড়তদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার বৃষ্টির পরিমান কম হওয়ায়, লতির উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে। আমরা পরিদিন ৩-৪ ট্রাক করে লতি পাঠাতাম উৎপাদ কম হওয়ায় ও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় ২ ট্রাক করে লতি পাঠাচ্ছি ঢাকায়।

উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের রতনপুর, রায়পুর, সালুয়া এইসব গ্রামে লতির চাষ বেশি হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেই কিছুটা লতির চাষ হয়েছে বলে জানা যায়। আমাদের দেশে কয়েক প্রকার কচুর লতির জাত রয়েছে। এসব জাতে গাছ ছোট,পাতা ছোট ও চিকন সরু ও লম্বা লতি উৎপন্ন হয়।

কচু সাধারণত দুই জাতের- বারি পানি কচু-১ ও বারি পানি কচু-২ । এগুলো দেশে উদ্ভাবিত। এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস এ পুরো মৌসুম  হলেও সারা বছর এর ফলন পাওয়া যায়।

লতির পাইকার মুমিন ও রনি বলেন পাঁচবিবির বটতলীতে এ লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন তারা। বর্তমান কৃষকদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি  লতি ৪০-৫০ টাকা দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তবে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে চাষি ও পাইকাররা রিতীমত বিপাকে পড়েছে। পাঁচবিবিতে উৎপাদিত কচুর লতির প্রধান পাইকারী বাজার ঢাকার কারওয়ান বাজার।

পাঁচবিবির কচুরলতি স্থানীয় চাহিদা মিটায়েও চলে যাচ্ছে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, বাইপাইল, টাঙ্গাইল, দৌলতপুর, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর,বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ বিষয়ে পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন এবছর রবি মৌসুমে ৬০০ হেক্টর জমিতে কচুরলতি চাষ হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়