ভিডিও

পাহাড়েও ইন্ধনদাতা সক্রিয়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৬:৩৫ বিকাল
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৬:৩৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটিতে গত তিন দিনে সহিংসতায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই শহরেই ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। জানা যায়, খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় এক বাঙালি যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার জেলার দীঘিনালায় সহিংসতার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো খাগড়াছড়ি এবং রাঙামাটি জেলায়। পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে অন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে পাহাড়ি আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলে হামলা করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি জেলা শহরের নিউজিল্যান্ড এলাকায় মো: মামুন নামের একজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করা হয়। নৃশংস এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানাতে জেলার দীঘিনালায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। দীঘিনালায় পরিকল্পিতভাবে দোকান পাটে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরির চেষ্টা করে।

মূলত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলাতেই দেশি বিদেশি চক্রগুলোর সহযোগিতায় পাহাড়ি সংগঠনগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে স্বপ্ন দেখছে বিদেশি আধিপত্য শক্তির সুযোগ করে দেওয়ার। এদিকে গত বুধবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মোহাম্মদ খাতুন (৩০)নামের এক ব্যক্তিকে মোটরসাইকেল ‘চুরির’ অভিযোগে পাহাড়ি সম্প্রদায় কর্তৃক মারধর করার ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়ে বলে জানা গেছে।

আহত মামুন বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালায় পাহাড়ি বাঙালি উভয় অধিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। যা নিয়ে খাগড়াছড়ির শহরে পাহাড়ি-বাঙালি উত্তেজনা শেষে রাতভর গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও নয়জন। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

খাগড়াছড়ির সহিংসতার জেরে পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটিতে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে প্রাণ গেছে একজনের। আহত অন্তত ৫০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই জেলাতেই ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের প্রভাবে উত্তপ্ত হয়েছে রাঙামাটিও। এসব এলাকার পরিস্থিতি পরিদর্শনে শনিবার খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে: জেনারেল (অব) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে নিরস্ত্র বাঙালি নাগরিক হত্যা, মসজিদ-মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বন্ধ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানব বন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল সন্ত্রাসীদের চিহ্নিতকরণ, অস্ত্র উদ্ধার করে আইনের আওতায় আনা এবং সেনা বৃদ্ধিসহ চারদফা দাবি জানান তারা।

শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্ট’ ব্যানারে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। পাহাড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করে শ্লোগান তোলেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজ তৌকি বলেন, সেনা শাসন হঠানোর নামে অতর্কিত হামলা করে নাটক সাজিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তারা জুমল্যান্ড বানাতে চায়। তাদের এই খেলা নতুন নয়। তারা এটা শুরু করেছে ১৯৭৩ সাল থেকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল বাঙালি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে সকল সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে সেনা তল্লাশি বাড়াতে হবে।

আমরা মনে করি কঠোর হস্তে পার্বত্য অঞ্চল সমূহে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমন করা প্রয়োজন। বহি: শক্তির মদদে এখানে রয়েছে নানা ধরনের সশস্ত্র পাহাড়ি গোষ্ঠী। তারা সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। শুধু তাই নয়, এরা দেশের অখন্ডতা নিয়েও বিদেশি শক্তির সঙ্গে গোপন আঁতাতে লিপ্ত। বিচ্ছিন্নতাবাদী এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দু:স্বপ্ন বিরোধী যে কোনো অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে হবে। ইতিপূর্বে প্রত্যাহত সেনা চৌকিগুলো পুন:স্থাপিত করা দরকার। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো আপোস নেই।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS