ভিডিও

ভয়ংকর মাদক এলএসডি

প্রকাশিত: অক্টোবর ০৭, ২০২৪, ১১:১৩ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০৮, ২০২৪, ১২:১৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আইস, খাত এরপর মাদকের সর্বশেষ সংযোজন ভয়ংকর এলএসডির (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাই ইথ্যালামাইড)  সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন ফার্মাসিউটিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া ড্রাগস ডটকমের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, লাইসারজিক অ্যাসিড থেকে তৈরি করা হয় এলএসডি। এ ড্রাগ মস্তিষ্কে এমন এক প্রভাব সৃষ্টি করে যা সম্মোহন সাহায্য করে। ফলে যারা এ ড্রাগ ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন রকম রং ও আকৃতির জিনিস দেখে, যার অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই।

এ ছাড়া এ  ড্রাগ মানব মস্তিষ্কের এমন সব স্নায়ুর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় যা অনেক সময় অতীত স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। এমনকি এ ড্রাগ মানুষকে তার জন্মকালীন স্মৃতি মনে করাতে সক্ষম। নেদারল্যান্ডস; সুইডেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এ দেশে আসে বছর পাঁচেক আগে। এ মাদক ছড়িয়ে পড়ে উচ্চ বিত্তের মধ্যে। তারপর এ মাদক আসা শুরু হয় ভারত থেকে।

ফেনসিডিল, হেরোইন, গাজা, ইয়াবা, চরম, আফিম, কোকেন ইত্যাদি ভারত হয়ে এ দেশে ঢুকছে অথবা ভারতের মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেরাই এসব মাদক স্থানীয়ভাবে তৈরি করে বাংলাদেশে প্রেরণ করছে। শুরু হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। হালে এ মাদক ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। একশ্রেণির শিক্ষার্থী এসব মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেবনকারীর মধ্যে নিজেকে অন্যকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার প্রবণতা প্রবল হয়ে ওঠে। ২০২১ সালে রাজধানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ ভয়ংকর এ মাদকের সন্ধান পেয়েছে। গলায় দা চালিয়ে আত্মহত্যা করা হাফিজুর নিজেও এ মাদকে আসক্ত ছিলেন। পুলিশের মতে, সেদিন রাত পৌনে আটটার দিকে ঢামেকের সামনে ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজের গলা নিজেই কাটতে থাকেন হাফিজুর।

তার পরিচয় জানার পর এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ খুঁজতে নেমে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ভয়ংকর এলএসডির বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ। তারা ফেসবুক গ্রুপ খুলে কৌশলে মাদকের প্রচারণা ও বিক্রি করেন। নেশায় আসক্তরা নানা কারণে ভয়ংকর এ নেশায় ডুব দেন। সন্তানদের প্রতি পরিবার সদস্যদের আরও দায়িত্ববান হতে হবে।

এলএসডি যে বন্ধ হয়নি তার প্রমাণ পাওয়া গেল এলএসডি উদ্ধারের খবর থেকে। কুষ্টিয়ায় যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় এলএসডি মাদক জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি)। গত ২ অক্টোবর বুধবার মিরপুর উপজেলার অন্তর্গত গোবিন্দপুর হাইওয়ে রোড এলাকায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে এ মাদক জব্দ করা হয়। জব্দ মাদকের আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হয়, বিজিবির কাছে গোপন তথ্য ছিল বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসে এলএসডির চালান রাজশাহী আসছে।

এর প্রেক্ষিতে বিজিবির একটি দল মিরপুরের গোবিন্দপুর হাইওয়ে রোডের ওপর অবস্থান নেয়। বাসটি সেখানে এলে বিজিবির টহলদল সেটি থামিয়ে তল্লাশি করে। এ সময় ৫০ এমএল-এর ২০ বোতল ভারতীয় এলএসডি পাওয়া যায়। তবে এই বিপুল অংকের মাদক জব্দের ঘটনায় কেউ আটক হয়েছে কিনা সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।

আমরা বলতে চাই, মাদক চক্রের গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করুন। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে যারা মাদক বিক্রি করছে তাদেরও কঠোরভাবে দমন করতে হবে। একই সঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবক, পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সমাজের সর্বস্তরে মাদক বিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করতে হবে। সন্তানদের প্রতি পরিবারে সদস্যদের আরও দায়িত্ববান হতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS