ভিডিও

নিত্যপণ্যের দাম চড়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৯:১৭ রাত
আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৯:১৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। একেক সময়ে একেক অজুহাত তুলে বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ডিম ও মুরগির দাম সরকার নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সপ্তাহ পার হতে চললেও বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরং সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পর ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা এবং মুরগির দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারদর স্থিতিশীল থাকলেও দেশের বাজারে এক লাফে চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-৬ টাকা। ধান-চালের পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও চালের দাম উর্ধ্বমুখী। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু চাল-চিনি-পাম অয়েল কিংবা ডিম-মুরগিই নয়, আলু পেঁয়াজ ও সবজি-মাছসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের দামই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

অথচ মাত্র ক’দিন আগেও শিক্ষার্থীরা বাজার তদারকির দায়িত্ব পালন করাকালীন সময় এসব পণ্য স্বাভাবিক দামে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু তারা মাঠ থেকে সরে আসার পর রাতারাতি সে চিত্র পাল্টে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর চাঁদাবাজ চক্র ও বাজার সিন্ডিকেট গাঁ-ঢাকা দিলেও ভোল পাল্টে তারা আবার ফিরে এসেছে। ফলে নিত্যপণ্যের বাজার ফের লাগামহীন হয়ে পড়েছে।

যদিও বাজার পর্যবেক্ষকরা এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাদের ভাষ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কোনো পদক্ষেপ এবং সমন্বিত তদারকি না থাকায় পাইকার থেকে শুরু করে মধ্যস্বত্বভোগী ও খুচরা বিক্রেতা সবাই যার যার ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে।

নিয়ম-কানুন না মেনে বিভিন্ন পণ্য অবৈধভাবে মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। সমন্বিত তদারকি না থাকায় সরবরাহ ও মজুতের সঠিক তথ্য কেউ জানতে পারছে না। যা বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা মনে করি, দেশে উৎপন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সব পর্যায়েই মনিটরিং থাকতে হবে-যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াতে না পারে। দ্রব্যমূল্য লাগাম টানার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল যেসব সংস্থা আছে, সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

বাজার ‘সিন্ডিকেট’ মোকাবিলায় ১৯৫৬ সালে আইন করেছিল পাকিস্তান সরকার। ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫৬’ শীর্ষক ওই আইনটিতে বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তালিকাভুক্ত ছিল যেগুলোর বাণিজ্য, ব্যবসায়িক লাইসেন্স থেকে শুরু করে মূল্য নির্ধারণ সবকিছুতেই হস্তক্ষেপ করতে পারে সরকার। পতিত হাসিনা সরকারের আমল থেকেই খাদ্যপণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে ছিল।

একদিকে অসহনীয় মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বাজার নিয়ে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছিল। সেই সিন্ডিকেট এখনও ভাঙ্গা যায়নি, তারা বহাল তবিয়তে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে।

আমরা মনে করি, অসাধুচক্রের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। এই অসাধু সিন্ডিকেট চক্র জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রুত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

এরা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে চলেছে। এরা বিভিন্ন অজুহাতকে সামনে রেখে কোনো সিন্ডিকেট বা অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়াতে না পারেন এবং অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস করে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সহনীয় পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। যথাযথ বাজার মনিটরিং করা হোক।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS