পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জানুয়ারী ৩১, ২০২৩, ১০:০৫ রাত
আপডেট: জানুয়ারী ৩১, ২০২৩, ১০:০৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

করোনা মহামারি গ্রাস করে ফেলেছিল গোটা বিশ্বকে। টানা প্রায় তিন বছর ধরে করোনার দাপুটে স্বভাব এখন স্তিমিত বলা চলে। তাই করোনার আগের অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি খাত। বিশ্বজুড়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন খাতও। এখনো করোনার পূর্বের অবস্থানে না ফিরলেও বিশ্বব্যাপী পর্যটক বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

জাতিসংঘের পর্যটন বিষয়ক সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও) জানা এ তথ্য। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত। গত সাত মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটক সংখ্যা ২০২১ সালের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ১৭২ শতাংশ। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২২ সালের প্রথমার্ধে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ আন্তর্জাতিক ভ্রমণে বের হয়েছিল।

পৃথিবীতে পর্যটন খাতের ২০১৯ সালে ছিল ১০ ট্রিলিয়ন বা ১০ লাখ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৩ সালে আবার তা ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, করোনার ধাক্কার পরও ২০২১ সালে বিদেশি পর্যটক থেকে ভারত ৮ হাজার ৮০০ মিলিয়ন ডলার, থাইল্যান্ড ৩ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ডলার, মালদ্বীপ ২ হাজার ১৬০ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলংকা ৩০৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

সেখানে বাংলাদেশ আয় করেছে মাত্র ১৬৭ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা মিয়ানমারের আয় থেকে (২১২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার) থেকেও কম। অন্যদিকে করোনার আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যটক থেকে আয় করে ৬৩৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, যখন থাইল্যান্ডের আয় ছিল ৬২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ডলার। তবে দেশি পর্যটন থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশের পর্যটন খাত পেয়েছে ৬ হাজার ৭৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের টাকা।

২০২৫ সাল নাগাদ সারা বিশ্বে পর্যটকের সংখ্যা ১৮০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে আর পর্যটকদের ৭৩ শতাংশই ভ্রমণ করবেন এশিয়ার দেশগুলোতে। ফলে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। খবর উঠে এসেছে, বিদেশিদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে আধুনিক ও চিত্ত বিনোদনের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করছে সরকার। যা অত্যন্ত ইতিবাচক।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বাকি বিশ্বের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলছে। উন্নত ও উদীয়মান উভয় অর্থনীতিকে টেনে ধরে রাখছে এই যুদ্ধ। জাতিসংঘের পর্যটন বিষয়ক সংস্থাটি বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার ফেডারেশনের আগ্রাসনের ফলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এটি একটি বড় নেতিবাচক ঝুঁকির প্রতিনিধিত্ব করছে। বড় বড় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এটি একটি বড় নেতিবাচক ঝুঁকির প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। বড় বড় অর্থনৈতিক পরিবেশ বেড়েছে সুদের হার, জ্বালানির দাম বেড়েছে এবং বেড়েছে খাদ্য পণ্যের দাম। বৈশ্বিক মন্দার আশংকা করা হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক পর্যটন পুনরুদ্ধারের জন্য বড় হুমকি।

আমরা বলতে চাই, পর্যটনকে শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করায় বাংলাদেশে এ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও খবরে উঠে এসেছে। ফলে এটিকে কাজে লাগাতে হবে। কার্যকর ও সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তথ্য মতে, বাংলাদেশে পর্যটন খাতে আয় প্রায় ৭৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। যা সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশের তুলনায় অপ্রতুল।

ফলে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সেই লক্ষ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনা বিরাজমান।

চোখ জুড়ানো মন মাতানো বাংলাদেশের সৌন্দর্য। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের অকৃত্রিম সৌন্দর্য, সিলেটের সবুজ অরন্য সহ আরও অনেক প্রাকৃতিক লীলাভূমি ও নানান কিছু এ দেশে বিরাজমান।

সঙ্গত কারণেই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও নিতে সবাইকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি প্রত্যাশিত। বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিবেশই এমন, একটু চেষ্টা করলে সারা দেশটাকেই পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। প্রয়োজন একটু সদিচ্ছার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়