রক্তাক্ত ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে ছাত্র আন্দোলন
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ক্রমবর্ধমান এই বিক্ষোভ সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তারা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি জ্যারেড মস্কোভিটস, জোশ গোটেইমার, ড্যান গোল্ডম্যান এবং ক্যাথি ম্যানিং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
জোশ গোটেইমার বলেছেন যে, চলমান বিক্ষোভের ফলে কলাম্বিয়ায় যদি ইহুদি শিক্ষার্থী নিরাপদ বোধ না করেন, সেটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মূল্য দিতে হবে বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত কোম্পানি ও ব্যক্তিদের বয়কট করার আহবান জানানো হচ্ছে।
গত ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং সেটির জের ধরে ইসরায়েল গাজায় যে হামলা চালাচ্ছে তাতে এখনো পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ। এ ধরনের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এরপর থেকে অন্যান্য জায়গাও বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং আটলান্টায় বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। টেক্সাসের অস্টিনে সেখানকার গভর্নর ট্রুপারদের নির্দেশ দিয়েছে বিক্ষোভ কারীদের আটক করতে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে নজিরবিহীন বিক্ষোভ চলছে।
উল্লেখ্য যে, এতে চল্লিশটির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ শিবির গড়ে তুলেছেন তাঁদের ক্যাম্পাসগুলোতে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না। এ পর্যন্ত সারা যুক্তরাষ্ট্রে নয় শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। এরপরও বিভিন্ন ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে বসে পড়েছেন শিক্ষার্থী। বরং শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ ও কর্তৃপক্ষ নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ দাঙ্গা পুলিশ দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করার উসকানি দিচ্ছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চাইছেন গাজার ওপর ইসরায়েল হামলা বন্ধ করুক। ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বছরে ইসরায়েলকে তিন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে।
এর পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। আন্দোলনকারীদের মতে, এসব সহায়তা বন্ধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা মূলক গবেষণা, শিক্ষা কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে কারিগরি, আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেয়, তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এই আন্দোলনে নানা জাতি, বর্ণ ও ধর্মের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।
এটা কোনো সুনির্দিষ্ট একটি দেশ, জাতি বা ধর্মের অনুসারীরা করছেন না। গণতন্ত্রকামী, উদারপন্থী, মধ্যপন্থী সবাই মিলেই এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। মূলত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের এই শিক্ষার্থী আন্দোলন পশ্চিমের সমাজে ফিলিস্তিন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলের পরিষ্কার বার্তা বহন করে।
এখানে শাসকগোষ্ঠী ও নাগরিক সমাজের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ঐতিহাসিকভাবে ইসরায়েলের পক্ষে থাকলেও সাধারণ নাগরিক সমাজ এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বছরের পর বছর অর্থ ও সামরিক সহায়তা দিয়ে সংঘাত জিইয়ে রাখার পক্ষে না যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ। ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কমছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টিভি নেটওয়ার্কের জরিপকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরা জানিয়েছে, দেশটির ৩২ শতাংশ মানুষ ইসরায়েলকে সহায়তা করার পক্ষে। গত বছরের অক্টোবরে ৪৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ইসরায়েলকে সহায়তা করার পক্ষে ছিলেন। ফলে দেখাই যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে দিন দিন ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বিশেষ করে যুদ্ধের প্রতি সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে প্রজন্মগত পার্থক্যও এই আন্দোলন সামনে নিয়ে এসেছে। তরুণেরাই এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ফিলিস্তিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণেরা বয়স্কদের থেকে অনেক বেশি সহানুভূতিশীল। যুক্তরাষ্ট্রের একদম ঘরের মধ্যে ইসরায়েল বিরোধী এত বড় বিক্ষোভ গড়ে ওঠা কিছুটা অবাক করার মতোই বিষয় বটে। অকল্পনীয়ও বলা চলে। এটা ইসরায়েলের জন্যও বড় ধরনের হুমকি হতে পারে ভবিষ্যতে। কারণ, ইসরায়েল টিকেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভর করে। যুক্তরাষ্ট্রেই যদি জনমত ঘুরে যায়, তবে ইসরায়েলের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে।
সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ও ইসরায়েলের গোয়েন্দা আগে থেকে আঁচ করতে পারেনি সম্ভবত। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বা শুরুতেই দমিয়ে দিতে পারেনি। ইসরায়েলপন্থী শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছিল যদিও। কিন্তু খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। পুরো আন্দোলনের মাঠ ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের দখলে চলে গেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের ও ইসরায়েলের বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবেই বিবেচিত হবে। এই আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিরোধীরা সুযোগ নিতে ভুল করছে না।
আন্দোলন শুরু হওয়ার পরপরই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। ইরানের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে এখন গণতন্ত্রের সবক শুনতে হয়। বোঝাই যাচ্ছে বিশ্বরাজনীতি- তে যুক্তরাষ্ট্র দিন দিন পায়ের নিচে জমি হারাচ্ছে। একটা কথা না বললেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়েই ফিলিস্তিনের পক্ষে মাঠে নেমেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েই শিক্ষার্থীদের পড়তে হয়। এই আন্দোলনের কারণে অনেকের সনদ বাতিল হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরে বহিষ্কৃত হতে পারেন। আর্থিক জরিমানার কবলে পড়তে পারেন। ইতিমধ্যেই অনেকে নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব বিবেচনায় নিয়েই তাঁরা আন্দোলন সৃষ্টি করেছেন ও যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুনউল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। পরের দিনই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে ডেকে আনেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ১০০-এর বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। কিছু বিষয়ে স্পষ্ট করেই বলা যায়, গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা মানেই সেমেটিকবিরোধী (ইহুদিবিদ্বেষী) মনোভাব প্রকাশ করা নয়।
এই প্রতিবাদের সঙ্গে হেইট স্পিচ বা ঘৃণাব্যঞ্জক বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই। এই প্রতিবাদ ইহুদি শিক্ষার্থীদের বিপদের মুখে ফেলছে না। একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেভাবে দাঁড়ানোর কথা, এখানে সেটাই ঘটেছে। এটি আলোচনা আর বিতর্ককে উসকে দিয়েছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ খুবই ভয়ংকর একটা ঘটনা। দুই পক্ষই এমন নৃশংসতা দেখিয়েছে যে যেটা মানুষের পক্ষে কতটা অমানবিক হওয়া যায়, তারই প্রদর্শন। এ কারণে এই সংঘাত শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের পূর্ববর্তী ধারণা নতুন করে পরীক্ষা করার সুযোগ করে দিয়েছে।
এতে করে একে অপরের কাছ থেকে শেখার সুযোগ করেও দিয়েছে। এখন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা যদি আন্দোলন করেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কী করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যুদ্ধ নিয়ে বিতর্কের উর্বর ক্ষেত্র হওয়া উচিত। অবশ্যই দ্বিমতকে স্বাগত জানানো, বিক্ষোভকে গ্রহণ করা, যুক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো এবং ভিন্নতাকে পরীক্ষা করা উচিত। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশন হওয়া উচিত শিক্ষার্থীরা কীভাবে শিখবে সেইপথ বাতলে দেওয়া, তারা কী চিন্তা করবে, সেটা বলে দেওয়া নয়।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ককে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে, বিতর্ককে চাপা দেওয়া যাবে না। মনে রাখা দরকার, সত্য একটা প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি এটা যতটা নামপদ, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্রিয়াপদ। এই দ্বিমতই চিন্তা ও আলোচনার জন্ম দেয়। এটা শিক্ষার্থীদের তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। তাদের আরও গভীর অনুসন্ধিৎসু করে তোলে।
পরিশেষে বলব, কিছু মানুষের জন্য অস্বস্তিকর হওয়া সত্ত্বেও, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের মতপ্রকাশের সহিষ্ণু পরিবেশ নিয়েই থাকা উচিত। সমস্ত প্রতিবাদী বক্তব্যকে ‘ঘৃণা বক্তব্য’ বলে তকমা দেওয়া এবং সেটা নিষিদ্ধ করার মানে হচ্ছে শিক্ষার কেন্দ্রীয় স্তম্ভকেই হাওয়া করে দেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই জোরালোভাবে কথা বলার পরিবেশ থাকতে হবে। শুধু মানবিক সহানুভূতিই নয় বৈশ্বিক বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ও সামাজিক পরিস্থিতিও এই আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে।
সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি, সামাজিক সুযোগ-সুবিধা হ্রাস পাওয়া, বেকারত্ব বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে। এ অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করা ও বিভিন্ন দেশকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই তরুণ প্রজন্ম ইসলাম বিদ্বেষ, পারস্পরিক অনাস্থা ও অবিশ্বাসের সমাজ থেকে বেরিয়ে আসতে চায়।
বিশ্বব্যাপী আমরা যা প্রত্যক্ষ করছি, তা ভালো বনাম মন্দ, ন্যায় বিচার বনাম অন্যায়ের লড়াই থেকে কম কিছু নয়। কেননা, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আমরাই রাজনৈতিক বিবাদের পুনঃআবিষ্কার করি। গাজা সংঘাতের সাত মাসে লন্ডন, প্যারিস, নিউইয়র্কসহ অন্যান্য শহরে আন্দোলন কারীরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেছেন।
সাংবিধানিকভাবে ইউরোপীয় গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতাকে গ্রহণ করার পরও অনেকে এ আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। তর্ক ও আন্দোলন করার অধিকার ইসরায়েল পন্থিসহ সবার জন্য অবশ্য সুরক্ষিত থাকবে। ন্যান্সি পেলোসি গত সপ্তাহে উল্লেখ করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোর প্রতিবাদী চিত্র জীবনের অংশ ছিল। আর গাজার গণহত্যা নিয়ে অভিযোগ তোলা পুরোপুরি ন্যায্য।
তিনি এ সময় বলেছিলেন, গাজায় যা ঘটছে, তাতে বিশ্ববিবেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ ধারায় বিভাজিত। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে মুসলিম ও অমুসলিম বিভাজন। এত বড় দুটি বিভাজনরেখা নিয়ে কোনো সমাজ বেশি দিন টিকতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অস্তিত্বের জন্য হলেও সমাজ থেকে এই বিভাজনরেখা মুছে দিতে হবে।
তরুণেরা সেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র কতটুকু নিজেদের পরিশোধিত করে শুধরে নিতে পারে। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। রাতারাতি বা হুট করে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলপন্থী অবস্থানের পরিবর্তন হবে না। তবে একটি নতুন ধারার সূচনা হতে পারে।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক
raihan567@yahoo.com
মন্তব্য করুন