প্রাণ ও প্রকৃতির জন্য কৃষি খাতে সংস্কার প্রয়োজন
রক্ত স্নাত ছাত্র-জনতার সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে দেশ দ্বিতীয় বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। ১৬০ খ্রিষ্টাব্দে চীনের ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল এটাই ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ছাত্র আন্দোলন।
দীর্ঘ ইতিহাসে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানেও ছাত্র আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। সাতচল্লিশের দেশভাগের পরবর্তী ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে গুলি করে শাসকরা। বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা।
১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইয়ুব খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য ১৯৬০-১৯৬১ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা হয়। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালন ও ১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী গ্রেফতার হলে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সর্বস্তরের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়লেও ছাত্ররা মুক্তিবাহিনী গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে স্বাধীন দেশের ছাত্ররা এরশাদ সরকারের পতন ঘটান। ২০১৮ সালে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে সড়কের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনে নামে সহপাঠিরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী । বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস কে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বৈঠকের পর বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সব সেক্টরে রিফর্ম (সংস্কার) এর কথা বলেছেন।
আমি একজন কৃষি কর্মী হিসেবে কৃষি সেক্টরের আবর্জনা দূর করার আবেদন রাখছি।আজকে যে স্বাধীন ভারতবর্ষ, স্বাধীন বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, সেই স্বাধীনতার পেছনে রয়েছে রক্তাক্ত ইতিহাস, আজকে যে মাটিতে প্রাণদায়ী ফসল ফলছে সেই মাটি শত শত বছর ধরে এই মাটির সন্তান কৃষকদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।
মহান দার্শনিক কার্ল মার্কস যেমন বলেছিলেন-‘মানব সমাজের ইতিহাস মূলত শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস', তেমনি এই ভারতবর্ষের ইতিহাস মূলত কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাস। বাংলাদেশের অভ্যুদয় কার্যত কৃষক বিদ্রোহের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের অভ্যুদয়।
অবিভক্ত ভারত কিংবা বাংলাদেশকে বিচার করতে গেলে অবধারিতভাবে টানতে হবে শত শত বছরব্যাপী চলমান কৃষক বিদ্রোহ, কৃষক আন্দোলন আর কৃষকের সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাস। এই দেশে যা কিছু মহান যা কিছু অবিস্মরণীয় তার সবই এই মাটির কৃষকের অবদান।
সরকারের কাছে কৃষকের চাওয়া-পাওয়া বেশী কিছু না তারা চায় ফসল ফলানোর উপকরণগুলো যেন তারা কম দামে পায় এসবের মধ্যে রয়েছে জমি, বীজ, শ্রমিক, সেচের পানি, বিদ্যুৎ, সার, কীটনাশক, সহজলভ্য ও টেকসই প্রযুক্তি।
আমাদের কৃষক বেশীরভাগ অশিক্ষিত, কৃষি বাজেট সর্ম্পকে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। কৃষি বিষয়ক ৫টি মন্ত্রণালয়ের (১. কৃষি, ২. মৎস্য ও পশু সম্পদ, ৩. পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, ৪. ভূমি ও ৫. পানিসম্পদ) জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৭,৩৩২ কোটি টাকা; যা মোট বাজেটের ৫.৯০ শতাংশ, জিডিপিতে কৃষির অবদান হিসেবে এটা নগণ্য।
কৃষি খাতের ৫টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কৃষি ও কৃষকের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত দুইটি মন্ত্রণালয়; কৃষি মন্ত্রণালয় ও মৎস্য-পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়, যাদের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে যথাক্রমে ২৭,২১৪ কোটি টাকা ও ৪,২৮৮ কোটি টাকা।
প্রকৃত বরাদ্দ মোটেই বাড়েনি বরং হিসাববিজ্ঞানের ‘ক্লারিক্যাল উইন্ডো ড্রেসিং’ করা হয়েছে মাত্র! বাজেট বক্তৃতায় কৃষিজাত পণ্য আমদানি বিকল্প তৈরির মাধ্যমে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, বাংলাদেশ এখনো কৃষিপ্রধান দেশ এবং কৃষিই আমাদের অগ্রাধিকার প্রাপ্ত খাত ফলে কৃষি খাতের উন্নয়নে প্রধান উপকরণগুলো বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শূন্য শুল্কহার অব্যাহত থাকবে বলে মুখরোচক কথা বলেই অর্থমন্ত্রী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি খাতের উল্লেখিত বাজেট পাশ করেন। দেশে কয়েক বছর ধরেই ৪৭ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপন্ন হয়। এ ধানের উৎপাদন খরচের একটি বড় অংশজুড়ে থাকে কীটনাশক ও বালাইনাশক।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষিবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রতি হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ বাবদ ব্যয় হয় ৩ হাজার ৭২ টাকা। প্রতি টন ধান উৎপাদনে এ ব্যয় ৫৪৬ টাকা। অর্থাৎ বছরে কেবল কীটনাশক ও বালাইনাশকের পেছনেই বোরো ধান চাষির ব্যয়ের পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
ধান উৎপাদনে বালাই ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে আগাছা দমনেই মোট উপকরণ ব্যয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ হচ্ছে বলে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) জানান। কীটনাশক ও বালাইনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি কৃষকের স্বাস্থ্যহানি ঘটছে।
বিভিন্ন ধরনের বালাইনাশকের প্রভাবে মানুষ, গবাদি পশু, মৎস্য সম্পদসহ সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। কীটনাশক মাটি ও ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করে জনস্বাস্থ্যকে বিপজ্জনক করে।
আরও পড়ুনএ বিষাক্ত পানি ব্যবহারে মানুষের স্নায়বিক রোগ বা ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া এসবের ব্যবহারের কারণে অনেক উপকারী পোকাও ধ্বংস হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ৪৫ হাজার ১৭২ টন রাসায়নিক দ্রব্য ফসলে ব্যবহার হচ্ছে।
এ পরিমাণ গত ১০ বছরের চার গুণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকলেন, সানটাপ, পুরাটাপ, সায়পারম্যাথ্রিন নামের কীটনাশকগুলো বাজারে বিক্রির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে। এসব কীটনাশক ধানে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছেঅথচ এসব কীটনাশক কৃষকরা সবজি উৎপাদনেও ব্যবহার করছেন, এসব থামাতে হবে।পরিবেশ-প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আন্তঃসম্পর্কের বিষয়টি প্রাগৈতিহাসিক।
আগে মানুষ বিশ্বাস করত প্রকৃতির মধ্যে অতি-ভৌতিক, জীবনধাত্রী এবং জীবনধারণ করার মতো সমস্ত শর্ত বিদ্যমান। এজন্য প্রাগৈতিহাসিক সময়ের মানুষ প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখাত প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধামিশ্রিত চেতনা ছিল বলেই মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সহমর্মিতার সম্পর্ক দৃঢ় ছিল। কৃষির উৎপাদন পদ্ধতি এবং মানুষের জীবিকার উৎসকে কেন্দ্র করে যেসব আচার-অনুষ্ঠান সমাজে গড়ে উঠেছিল সেসব উৎসব নানা কারণে হারিয়ে যাচ্ছে।
যদি আমরা আবার স্থায়িত্বশীল কৃষিব্যবস্থার প্রবর্তন করতে পারি, তাহলে কৃষির মাধ্যমে মানুষ ও প্রকৃতি-পরিবেশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। যে কৃষি ও প্রকৃতি মানুষের প্রাণ বাঁচায়, সেই কৃষি ও প্রকৃতি যদি বাঁচে তবে তার সঙ্গে জীবনের উৎসসমূহও বাঁচবে।সভ্যতার প্রয়োজনে মানুষ যখন জমির ওপর নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করল, তখনই প্রাকৃতিক পুনরুজ্জীবনী কৃষির অপমৃত্যু ঘটল।
ধানের শিষ একদিকে যেমন সম্পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি, ঠিক তেমনি এই প্রাচুর্যের পেছনে যে ভূমি ও প্রকৃতির অবমূল্যায়ন হচ্ছে, তা এই প্রাচুর্যের নিশানাকে শেষ অবধি টেকসই করতে পারছে না। প্রতিটি ফসল গোলায় ভরার সঙ্গে সঙ্গে ভূমির জীববৈচিত্র্যের ক্রমাগত বিলুপ্তির খেসারত দিতে হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তি আমাদের নজরে এসেছে ঠিকই কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাসের বিষবাষ্প পুরো প্রকৃতিকেই চোখ রাঙাচ্ছে।
যেকোনো মূল্যে গোলার ধান বাড়ানো নয়, বরং কৃষির সেই প্রাকৃতিক পুনরুজ্জীবনী চরিত্রকে কীভাবে আধুনিক কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত করা যায়, তার সন্ধান করতে হবে। একদিকে ক্রমবর্ধমান মানবসভ্যতার দাবি অন্যদিকে জলবায়ুর স্থিতিশীলতার তাগিদ- এই টানাপোড়েনে আধুনিক কৃষি এখন বড়ই বিপাকে। কোনো সন্দেহ নেই, যান্ত্রিক কৃষিব্যবস্থা কয়েক দশক ধরে ব্যাপক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করেছে।
প্রতিটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন মানুষের উৎপাদন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। গরু ও ঘোড়া দিয়ে হালচাষের পরিবর্তে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ হচ্ছে। আবার ট্রাক্টরের পরিবর্তে সম্মিলিত চাষ পদ্ধতি আসছে। নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম উদ্ভিদের বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে চিহ্নিত, তারপর সেগুলো থেকে কৃত্রিম সার তৈরি হচ্ছে।
আমরা ভেষজনাশক ও কীটনাশকও আবিষ্কার হয়েছে এর সাহায্যে আগাছা ও ধ্বংসাত্মক পোকামাকড় কেবল স্প্রে করে হত্যা করা যায়। কৃষিকাজের শিল্পায়ন মানুষের চেতনার উজ্জ্বল উদাহরণ। তবে এই কৃষিব্যবস্থা অস্থিতিশীল। এটি প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলে এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস করে দেয়। প্রাণ ও প্রকৃতির ক্ষতি হয় এমন কোন হানাদারি বা ক্ষতিকর কাজ সতর্কতার সঙ্গে পরিহার করা উচিত।
চাষাবাদের অর্থ শুধু মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন নয়; বরং মানুষের খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে পশু, পাখি, কীটপতঙ্গসহ প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আহার জোগানো এবং তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। শুধু খাদ্যও নয় মশলা, ঔষধ, জ্বালানি, ঘর ও আসবাবপত্র নির্মাণ সামগ্রী, ঔষধ, সুতা অর্থাৎ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের জন্য যা কিছু দরকার তার সবই আমাদের উৎপাদন করতে হবে।
পঙ্খীরাজ, গোবিন্দভোগ, জামাইভোগ, মোগাইবালাম, রূপকথা, রাঁধুনীপাগল কিংবা পাঙ্গাস-বিচিত্র এসব নাম শুনলে এখন বোঝাই যায় না যে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বরেন্দ্র এলাকার এগুলো ছিলো এক সময় দেশীয়জাতের ধানের নাম।
আবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বয়স্ক কৃষকেরা অনেকে শুধু মনেই করতে পারেন যে লক্ষ্মীজটা, রানী সেলুট, ঝুমুর বালাম কিংবা হিজলদিঘি ও রাজা মোড়ল অথবা এ ধরনের অনেক চমকপ্রদ নামের দেশীয়জাতের ধান ছিলো এ অঞ্চলে, যেগুলো এখন আর নেই। রায়েদা, লক্ষ্মীবিলাস, হনুমানজটা, নোনাকুর্চি, পাকড়ী, ঝিংগাশাইল, লালঢেপা, যশোয়া, তিলকাবুর, চিনিসাগর, সোনামুখী, কালোমেখী, সূর্যমুখী, খেজুরঝুপি, কলসকাটি, দুলাভোগ, পোড়াবিন্নি, শিলগুড়ি, কাটারীভোগ, দাদখানি, রাধুঁনীপাগল, মহিষদল, মাটিচাক, বটেশ্বর, ফুলবাদাল, হরিলক্ষ্মী, সরিষাজুরি, মধুশাইল, ফুলমালা, বাঁশফুল, কটকতারা, সরিষাফুলি, বাইলাম, ঘিগজ, রাজাশাইল, মধুমালতী, যাত্রামুকুট, বাবইঝাঁক, জলকুমারী, গান্ধীভোগ, লেবুশাইল, ফুলমুক্তা, বেনামুড়ি, পাটজাগ, কালামানিক, হরিঙ্গাদীঘা প্রভৃতি ও স্থানীয় জাতের ধান যা প্রায় বিলুপ্ত। খাদ্য উৎপাদনে সফলতা আছে তবে যে স্খলিত ধারা চলছে তা সংশোধন না করলে হয়তো এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত আউশ, আমন ও বোরো মিলিয়ে ধানের ১১৫ টি জাত উদ্ভাবিত হয়েছে তবে এক সময়কার বিআর-১১, ব্রিধান-২৮ জাতের মতো জনপ্রিয় জাত এখন নেই বললেই চলে এখন শুধুই ইন্ডিয়ান (কাজললতা, শুভলতা, স্বর্ণা, কাটারী, মিনিকেট, জিরাশাইল, রনজিত প্রভৃতি প্রায় ৫৫%) জাতের জয়-জয়কার, এসব জাতের ধান চাষ করে বালাইনাশক কিনে কৃষক সর্বস্বান্ত হচ্ছে, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা দরকার।
কৃষির উন্নয়নে গৃহীত অনেক প্রকল্প অধিকতর যাচাই-বাছাই না করে গ্রহণ করার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তা কৃষকের সরাসরি উপকারে আসছে না। কৃষির সকল প্রযুক্তি সর্বোপরি বাস্তবায়িত হয় মাঠ কর্মী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণের মাধ্যমে অথচ তারাই ন্যায্য অধিকার, সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তাদের পেশাগত মানোন্নয়ন ঘটানো গেলে জল মাটির সাথে মিশে কৃষকের পাশে থেকে আরো অধিকতর সেবা দিতে সমর্থ হবে। কৃষি একটি শ্রমঘন পেশা, এর মাধ্যমে অধিক কর্ম সংস্থানের সুযোগ আছে তাই জিডিপিতে অবদান যতটুকুই থাকুক না কেন উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনার দাবী রাখে।
মন্তব্য করুন