এইচএসসি পরীক্ষা পেছাতে চায় না আন্তঃশিক্ষা বোর্ড
করতোয়া ডেস্ক: আগামী ৩০ জুন শুরু হবে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। তবে, নানা যুক্তি তুলে ধরে পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন অনেকে। এমনকি, পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে, পরীক্ষা পেছানোর এ দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। ৩০ জুন থেকে পরীক্ষা শুরু করতে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তাদের দাবি ভিত্তিহীন, এটা মানার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ সময় শিক্ষার্থীদের অযথা সময় নষ্ট না করে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া উচিত।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের পক্ষে স্মারকলিপি জমা দেন ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী মাইশা মাহফুজ স্নেহা। এ সময় বিভিন্ন কলেজের আরও কয়েকজন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে পরীক্ষার্থীরা বলেন, ‘আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই পত্রের মাধ্যমে আমাদের দাবির সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছি এবং আপনার সদয় বিবেচনা কামনা করছি। ’
পরীক্ষা পেছানোর কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়, ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। এবারের বন্যায় সিলেট নগরের ২৩টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ জন বন্যাকবলিত হন।
আরও পড়ুনএদিকে, দ্বিতীয় দফায় সিলেটে ৪৮৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২৬টি বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া, সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যাকবলিত হয়েছে ২৫৯টি বিদ্যালয়। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৪৮টি বিদ্যালয়।
এছাড়া, বেশ কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে তলিয়েছে টেকনাফ। যদিও পানি নামতে শুরু করেছে, তবু বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি এখনও দেখা যাচ্ছে না এ অঞ্চলে। ময়মনসিংহ বিভাগে বন্যা পরিস্থিতিরও চরম অবনতি হচ্ছে। বন্যাকবলিত রয়েছে বিভাগের নেত্রকোনা জেলার শত শত গ্রাম।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা গত বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ছাত্রছাত্রীদের এইচএসসি শেষ করেই ভর্তিযুদ্ধে নামতে হয়। সারা জীবনের স্বপ্ন অল্প কিছুদিনের প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে। গত বছর চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা ১০ দিন পেছানো হয়েছিল। কিন্তু, মেডিক্যাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা পেছায়নি। সব বোর্ডের সঙ্গেই চট্টগ্রাম বোর্ডের পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি পরীক্ষা দেয়। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রছাত্রীরা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ে। বাকিদের অনেক পরে ভর্তি প্রস্তুতি শুরু করায় মানসিক চাপের কারণে অনেকের স্বপ্নভঙ্গ ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়। অথচ সবাই একই শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্গত। সবাই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ পাওয়ার অধিকার রাখে।
এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতির বিষয়টি আমলে নিয়ে পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন