সিরাজগঞ্জে জলপাই হাটের কেনাবেচা জমে উঠেছে
জয়নাল আবেদীন জয়, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের ব্যতিক্রমী জলপাই হাটে এখন কেনাবেচা জমে উঠেছে। সদর উপজেলার বাগবাটিতে দীর্ঘদিন ধরে বসে এ হাট। দূর-দূরান্তের পাইকার আসায় হাটে ভাল দামে জলপাই বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয়রা।
সিরাজগঞ্জ উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কম বেশি জলপাই চাষাবাদ হয়। এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি জলপাই গাছ আছে। এসব গাছে প্রচুর পরিমাণ জলপাই ধরে। মূলত আশ্বিন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই তিন মাস জলপাই মৌসুম। একটি গাছে প্রকারভেদে ৮ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত জলপাই ধরে। স্থানীয় কানগাতি, হরিনা বাগবাটি, ঘোড়াচড়া, খাগা, সুবর্ণগাতি, ফুলকোচা গ্রামে বেশি জলপাই গাছ দেখা যায়।
গাছ থেকে জলপাই পেড়ে বাড়ির পাশে স্থানীয় হাটে ভাল দামে বিক্রির সুবিধা থাকায় চাষিরা এ গাছের বাড়তি যত্ন নেন বছরে এসময় কোন প্রকার বাড়তি খরচ ছাড়া জলপাই বিক্রি করে তারা বাড়তি আয় করে থাকেন।
এসব এলাকার জলপাই কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে বাগবাটিতে বসে ব্যতিক্রমী হাট। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথেই হাট এখন সরগম হচ্ছে টক জাতীয় ফল কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে। বছরের এই মৌসুমে জলপাই কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে বসে হাট।
এখানে প্রচুর জলপাই পাওয়ায় দূর দূরান্তের পাইকার আসেন হাটে। স্থানীয় বিক্রেতারা গাছ থেকে জলপাই পেড়ে বস্তাবন্দি করে হাটে এনে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কেনাবেচা। তবে মূল হাট বসে সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার। চাষিদের কাছ থেকে জলপাই কিনে হাটেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পর ধুয়ে মুছে বস্তাবন্দি করা হয়।
আচারসহ টক জাতীয় পণ্য তৈরিতে এ ফলের চাহিদা দেশজুড়ে। এজন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি বগুড়া, পাবনা, ঢাকার পাইকাররা এখান থেকে জলপাই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন সারাদেশে। হাটে প্রতিদিন তিন থেকে চার লাখ টাকার জলপাই কেনা বেচা হয়।
আরও পড়ুনব্যবসায়ী আজাহার আলী জানান, গাছে মুকুল আসার পরই মালিকদের গাছ থেকে আমরা বেশিরভাগ গাছ কিনে নেই। অনেক চাষি নিজেরাই গাছ থেকে জলপাই পেড়ে হাটে এনে তাদের কাছে বিক্রি করেন। বর্তমানে হাটে ৭শ' থেকে ৮শ' টাকা মণ দরে জলপাই বিক্রি হচ্ছে। এগুলো তারা আবার সারাদেশের বাজারে পাইকারি বিক্রি করে থাকেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, এ উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে জলপাই চাষাবাদ হয়েছে। এখান থেকে ১১০ মে.টন জলপাই পাওয়া যাবে। এখানে প্রচুর জলপাই উৎপাদন হবার কারণে বাগবাটি এলাকায় এর হাট বসে।
দূর দূরান্তের পাইকার আসায় বাড়ির পাশে হাটে জলপাই বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। কৃষি বিভাগ থেকে আমরা চাষিদের পরার্মশসহ সব রকমের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন