বগুড়ার ধুনটে সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : রবি মৌসুমের শুরুতে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বগুড়ার ধুনটে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। বিশেষ করে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
কৃষকদের অভিযোগ, পরিবেশকেরা (ডিলার) কৃষকদের কাছে সার বিক্রি না করে অতিরিক্ত দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। পরে সেই সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। এরপরও চাহিদা মতো সার পাচ্ছেন না কৃষকরা। যদিও কৃষি অধিদপ্তর সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় বিসিআইসি ডিলার ১১জন ও সাব-ডিলার ৪৭ জন এবং বিএডিসি ২০ জন ডিলার রয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে ৫০ হাজার ৫০১ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সব ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে জমিতে কৃষকেরা টিএসপি, এমওপি, ডিএপি ও ইউরিয়া সার ব্যবহার করেন।
তবে এসব ফসল উৎপাদনে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন অক্টোবর মাসে সেই চাদিহার অর্ধেকেও কম সারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে টিএসপি ৫৬০ মেট্রিক টন চাহিদার অনুকূলে ১৭৩ টন, এমওপি ৪৭৫ টনের অনুকূলে ২৭২ টন, ডিএপি ৪৯০ টনের অনুকূলে ৩৮৮ টন, ইউরিয়া ৪৯০ টনের অনুকূলে ৩৮৩ টন এবং নভেম্বর মাসে টিএসপি ৫৫০ মেট্রিক টন চাহিদার অনুকূলে ২৩১ টন, এমওপি ৫৬২ টনের অনুকূলে ৩৩৫ টন, ডিএপি ৯৫৯ টনের অনুকূলে ৫০৬ টন ও ইউরিয়া ১ হাজার ১৬০ টনের অনুকূলে ৫৭৭ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা দোকানে মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করছেন না। তারা প্রতি বস্তা সার সরকারি দামের চেয়ে ৭০ থেকে ১৮০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন। সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলছেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার বের করে দিচ্ছেন। এছাড়া বিক্রেতারা কৃষকদের কোন সঠিক বিক্রি রশিদ দেন না। যেটা দেন তার চেয়ে তাদেরকে বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে করতে হয়।
আরও পড়ুনডিলারদের কাছে এভাবে জিম্মি হয়ে তারা অসহায় বোধ করছেন। সরকার অনুমোদিত এই ডিলাররা সরকারি নির্দেশনা না মানায় দেখা দিয়েছে সারের কৃত্রিম সংকট। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। তবে এ বিষয়ে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি করছেন তারা।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম করতোয়া’কে বলেন, এখন সারের কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও কোথাও কোথাও সংকটের অজুহাতে বেশি দামে সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রির জন্য তাদের তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল করতোয়া’কে বলেন, সার নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন