জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ?
নভেম্বরের শেষ দিক থেকে প্রকৃতিতে শীতের আভাস লক্ষ করা গেছে। বর্তমান শীত তুলনামূলকভাবে শহরে কম পড়ছে। তবে শহরের সীমানা একটু পেরিয়ে গেলেই শীতের প্রভাব বোঝা যাচ্ছে। গায়ে লাগছে উত্তরে হাওয়া। আর এমন শীতল পরিস্থিতিতে বেড়েছে জ্বরের প্রকোপ। বাচ্চা থেকে বয়োবৃদ্ধ, সকলেই এই সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন।
তবে মুশকিল হলো, কিছু কিছু মানুষ জ্বর এলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করে দিচ্ছেন। তাতেই সমস্যা থেকে দ্রুত সেরে ওঠা যাবে বলে তাদের বিশ্বাস। তবে এই ধারণার পিছনে কি কোনো যুক্তি রয়েছে? সত্যিই কি জ্বর এলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করা উচিত?
জ্বর আসলেই অ্যান্টিবায়োটিক?
চিকিৎসাবিদদের মতে, জ্বরের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জ্বরের পিছনে থাকে ভাইরাসের কারসাজি। আর অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে একবারেই কার্যকর নয়। এই ওষুধ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। যার ফলে ভাইরাল ইনফেকশনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে তেমন একটা উপকার মেলে না। উল্টে শরীরের হাল বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
তারা বলছেন, অহেতুক অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে দরকারের সময় ওই অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কাজ না করতেও পারে। তখন আবার অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়। আর মুশকিল হল, এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় হাতের কাছে কোনো বিকল্প থাকবে না। তখন ছোট ছোট অসুখ থেকে সেরে ওঠাও কঠিন হয়ে পড়বে। তাই হুটহাট অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুনজ্বর এলে কী করবেন?
প্রথম ৩ দিন শুধু প্যারাসিটামল খান। প্যারাসিটামল ৬৫০ পাওয়ার দিনে ৩ থেকে ৪টি খেতে পারেন। তাতে জ্বর কমে যাবে। সেই সঙ্গে গায়ে, হাত, পায়ে ব্যথাও কমবে। এর পাশাপাশি পানি পান বাড়ান। দিনে অন্ততপক্ষে ২.৫ লিটার পানি পান করতে হবে। চাইলে ওআরএস পানিও খেতে পারেন। সেই সঙ্গে পাতে রাখুন শাক, সবজি ও ফল। পাশাপাশি চিকেন, মাছ, ডিম, সোয়াবিন, টোফুর মতো প্রোটিন রিচ খাবারও খেতে হবে। তাতেই সমস্যাকে কাবু করে ফেলতে পারবেন বলে জানালেন এই বিশেষজ্ঞ।
চিকিৎসকের কাছে যান
৩ দিন পরও যদি জ্বর না কমে, গায়ে হাত-পায়ে খুব ব্যথা হয়, বমি হতে থাকে বা ডায়ারিয়া হয়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তিনি যেই টেস্ট করতে বলবেন, তা করিয়ে নিন। তার পর তিনি যদি মনে করেন অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন রয়েছে, তা হলে তা খাবেন। তার আগে নয়। এর পাশাপাশি আরও কোনো ওষুধের প্রয়োজন থাকলেও তাও খেতে হবে। তাই এই বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখুন।
মন্তব্য করুন