বগুড়ার বাজারে স্বরূপে নিষিদ্ধ পলিথিন
শাওন রহমান : দেশের বাজারে পলিথিন এবং পলিপ্রোপাইলিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে বগুড়ার কাঁচাবাজারসহ সর্বত্রই স্বরূপে ফিরেছে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। ১ নভেম্বর পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণার পর মাঝের কিছ দিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা পলিথিন উৎপাদন কারখানা ও বাজারে অভিযান চালালেও এর ব্যবহার সীমিত লক্ষ্য করা যায়, তবে আবার স্বরূপে ফিরেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্যটি।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, খুচরা ও স্বল্প মূল্যের পণ্য বিক্রিতে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই পলিথিনে পণ্য দিতে হচ্ছে তাদের। ক্রেতারাও বলছেন, কম দামে পলিথিনের বিকল্প কিছু বাজারে আসুক, তাহলে এর ব্যবহার এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।
বগুড়া শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যেই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগে মাছ, মাংস ও সবজিসহ সব ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ মানছেন না পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। পলিথিনের বিকল্প সহজলভ্য না হওয়ায় বাধ্য হয়েই পলিথিন ব্যবহার করতে হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
সজিব মিয়া নামে বউ বাজারের এক মুদি দোকানি বলেন, পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, আমরাও পলিথিন ব্যবহারের পক্ষে না, তবে বাজারে এর বিকল্প নেই। বিক্রির স্বার্থে ক্রেতাদের পলিথিন দিতেই হচ্ছে। আমি না দিলে অন্য কেউ ঠিকই গোপনে পলিথিন ব্যাগে পণ্য বিক্রি করছেন।
রাজা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী রতন মিয়া বলেন, বেশিরভাগ ক্রেতা বাজারে ব্যাগ নিয়ে আসেন না। পলিথিনে সবজি না দিলে নিতেও চান না। আবার ১০ টাকা দামের ব্যাগ দিলে টাকাও দিতে চান না। তাই বাধ্য হয়েই পলিথিনে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজা বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর বলেন, সরকারের অভিযানের পর পলিথিন ছাড়া বিক্রি করে দেখেছি, কাস্টমার সদাই নিতে চান না। অন্য বিক্রেতারা ঠিকই পলিথিন দেন। পরে বেচাবিক্রির স্বার্থে দোকানে পলিথিন রাখছি।
আরও পড়ুনবাজার করতে আসা আতাউর রহমান বলেন, আগে পলিথিনের বিকল্প বাজারে সহজলভ্য করা উচিত। কারণ, বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন যাপনের যে ধরন তাতে পলিথিন ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি পলিথিনের উপৎপাদন বন্ধ করতে হবে।
বাজারে আসা গৃহিনী আলিফা খাতুন বলেন, চাল, ডাল ও চিনি নেয়ার জন্য বাজারে এখন বিকল্প কিছুই নেই। কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করলে নিরাপদে এসব পণ্য বাড়ি পর্যন্ত যায় না, যে কারণে আমরাও বাধ্য হয়ে পলিথিন ব্যবহার করছি। পলিথিনের বিকল্প কিছু বের করলে আমাদের জন্য ভালো হয়, না হলে পলিথিন ছাড়া উপায় দেখছি না।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মুহা. আহসান হাবিব বলেন, সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই বগুড়ার বিভিন্ন বাজার ও পলিথিন উৎপাদন কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ধীরে ধীরে এর ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। ক্রেতাসাধারণ এবং ব্যবসায়ীদের পলিথিনের কুফল সম্পর্কে বাঝানো হচ্ছে। পলিথিন ব্যবহার বন্ধে আরও কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে পলিথিন ব্যবহার বন্ধে সবার আগে প্রয়োজন সবার সচেতনতা।
মন্তব্য করুন