বগুড়ার কাহালুর আতা বাহিনীর প্রধান ও তার সহযোগী বিপুল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের ত্রাস আতা বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী আতাউর রহমান ওরফে আতা (২৮) ও তার সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মন (২৩) ঢাকায় র্যাব’র হাতে ধরা পড়েছে। গতকাল রোববার রাতে র্যাব সদস্যরা তাদের কাহালু থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। গ্রেপ্তারকৃত আতাউর রহমান আতা কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের শিবাকলমা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের এবং বিপুল চন্দ্র বর্মন একই গ্রামের মন্টু চন্দ্র বর্মনের ছেলে।
পুলিশ জানায় আতার বিরুদ্ধে কাহালু থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, প্রাণনাশের হুমকি, অস্ত্র, জমি-বাড়ি দখলসহ মোট ৯টি এবং তার সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মনের বিরুদ্ধেও হত্যাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। মামলার কারণে আতা ও বিপুল চন্দ্র ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। গোপন সংবাদেরভিত্তিতে গত রোববার দুপুরে র্যাব ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কাহালু থানা পুলিশ তাদের আদালতে প্রেরণ করে।
এর আগেও আতা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ধারালো অস্ত্রসহ ধরা পড়ে জেলহাজতে যায়। কিছুদিন পর সে আবার জেল থেকে জামিনে মুক্তি পায়। কাহালুতে অস্ত্র মামলায় ধরা পড়ার পর সে পুলিশকে বলেছিল সে আর কোন অপরাধে জড়াবে না। কিন্তু জেলহাজত থেকে বের হবার পরেও সে অপরাধ করা থেকে বিরত হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালঞ্চা ইউনিয়ন এলাকার কয়েকজন জানান, কাহালুর শিবাকলমা গ্রামের আতা এক সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। পরবর্তীতে সে অপরাধ জগতের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এরপর সে ৮/১০ জন সহযোগী নিয়ে এলাকায় একটি বাহিনী গড়ে তোলে। এলাকাবাসী তার গড়া বাহিনীর নাম ‘আতা বাহিনী’। আতা মালঞ্চা ইউনিয়ন এলাকায় আতা বাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচিত ছিল।
আরও পড়ুনসে ও তার বাহিনীর সদস্যরা এতই নিষ্ঠুর ছিল যে, তারা এলাকার কাউকে কোন পরোয়া করতো না। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তার জীবনে নেমে আসে নির্যাতন, আর নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে দিতে হতো টাকা।
উল্লেখ, আতা বাহিনীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় বিগত ২০২৩ সালের ৬ জুন রাতে তার বাহিনীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন মালঞ্চা ইউনিয়নের কলমা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ (৬০)। ওই বাহিনীর সদস্যরা আব্দুস সামাদকে কলমা বাজার থেকে তুলে নিয়ে নির্জন স্থানে বেদম প্রহার করে তার বাম পা ভেঙে ফেলাসহ তাকে গুরুতর আহত করে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায়।
আতা বাহিনীর তান্ডবে মালঞ্চা ইউনিয়ন এলাকার মানুষ কখনই তাদের সম্পর্কে মুখ খোলার সাহস পান না। এলাকার মানুষ আরও জানান, আতা বাহিনীর অত্যাচারে ইউনিয়নের অনেক মানুষকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র থাকতে হয়েছে। আতার গ্রেপ্তারের সংবাদে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মন্তব্য করুন