নসরুল হামিদসহ পরিবারের তিনজনের বিরুদ্ধে ৩ মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং একাধিক ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন ও স্থানান্তরের অভিযোগে সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তার স্ত্রী সীমা হামিদ, ছেলে জারিফ হামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুদকের জেলা কার্যালয় ঢাকায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিকেলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা এজাহারে বলা হয়, নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হতে সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ। তিনি ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫৭ টাকা সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখেন। নিজ নামে ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ৩১৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৩ হাজার ৩১৩ টাকা। মোট উত্তোলনের পরিমাণ ৩১৮০ কোটি ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭২৯ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে এটার হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়।
দ্বিতীয় মামলায় নসরুল হামিদের ছেলে জারিফ হামিদকে প্রধান আসামি করা হয়। নসরুল হামিদকেও আসামি করা হয় এতে।
এজাহারে বলা হয়, নসরুল হামিদের ছেলে জারিফ হামিদ পিতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ। তিনি ২০ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার ২০ টাকা সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখেন। নিজ নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৪২৩ টাকা। মোট উত্তোলনের ৫ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৫২৬ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে এটার হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় ধারায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুনতৃতীয় মামলায় প্রধান আসামি হলেন নসরুল হামিদের স্ত্রী সীমা হামিদ। স্ত্রীর সঙ্গে, নসরুল হামিদকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে বলা হয়, আসামি সীমা হামিদ এবং নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার পিতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ। তারা ৬,৯৪,৩৩,৯১২.৯১ টাকা সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখেন। নিজ নামে ২০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১২,৭৭,৮৬,৬৯৯ টাকা জমা। মোট ১১,১৮,৪৯,৮১৮ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে উহার হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ বিধির ১০৯ ধারায় ধারায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়।
তিন মামলার অভিযোগ অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান ছিলেন দুদকের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তাকে সদস্য হিসেবে সহায়তা করেন সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম, আল-আমিন ও খোরশেদ আলম।
মন্তব্য করুন