বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে জমির দখল নিয়ে সংঘর্ষ বাড়ছে
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে জমিজমা দখল নিয়ে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ সংঘর্ষে ২০ জনের মতো আহত হয়ে হাসপাতাল ভর্তি রয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
সরকার পরিবর্তনের পরপরই উপজেলার যমুনা নদীতে চর দখল বা জমিজমা নিয়ে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কাজলা, কর্ণিবাড়ী এবং বোহাইল ইউনিয়নে জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। সর্বশেষ উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের দক্ষিণ জামথল গ্রামে গত ১৬ ডিসেম্বর জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে উভয়পক্ষের ২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। সারিয়াকান্দি থানা সূত্রে জানা গেছে, কাজলা ইউনিয়নের দক্ষিণ জামথল মৌজার একটি জমি নিয়ে একই গ্রামের নূর আলমের (৩০) লোকজনের সাথে মনিরউদ্দিন মনু খানের সাথে বিবাদ চলমান ছিল। নালিশী জমিতে নূর আলমের লোকজন কলাইয়ের আবাদ করেছিলেন। গত ১৬ ডিসেম্বর সকালে মনু খানের লোকজন নালিশী জমিতে কলাই আবাদ ভেঙে দিয়ে ভুট্টার বীজ বপণ করতে যান। সংবাদ পেয়ে নূর আলমের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুট্টার বীজ বপণে বাধা দেন। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে নূর আলমের পক্ষের ১০ জন আহত হন। আহতরা জামালপুর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। পরে নূর আলম ২৩ জনকে আসামি করে সারিয়াকান্দি থানার মামলা দায়ের করেন। এদিকে একই ঘটনায় মনু খানেরও সাতজন লোক আহত হন। আহতরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে মনির উদ্দিন খান মনু বাদি হয়ে ২১ জনকে আসামি করে সারিয়াকান্দি থানায় একটি মামলা দায়ের কন। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে কেউ হাসপাতাল, আবার কেউবা বাড়িতেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদিকে গত ২৩ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টার দিকে একই ইউনিয়নের টেংরাকুড়া মৌজায় অবস্থিত জমিদারী পত্তনী জমি বেদখল বাড়িঘর ভাঙচুর ও গরু-ছাগল লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে চর ঘাগুয়া গ্রামের অলি মোল্লার ছেলে জিয়া মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সেখানে ৩০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট এবং ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে।
চরবাসী আয়েন উদ্দিন বলেন, চরাঞ্চলে জমাজমি সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জেরে প্রায়ই সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগ্রই বড়কিছু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দ্রতু চরাঞ্চলে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চলাঞ্চলে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলে মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং আসামি ধরার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর নাব্যতা না থাকায় নৌকা, হেঁটে এবং ঘোড়ার গাড়িতে চরে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।
মন্তব্য করুন