ভিডিও বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫

পোশাক খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

পোশাক খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও ইউরোপের বাজারে পোশাক রপ্তানি ধীরে ধীরে ইতিবাচক ধারায় ফিরছে। চলতি বছরে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে ইউরোপের বাজারে রপ্তানি বেড়েছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এটি দেশের পোশাক খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। কারণ, এর আগে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউরোপে রপ্তানি ২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কমেছিল। ইইউ বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে চীন ও বাংলাদেশের পরেই অবস্থান করছে তুরস্ক, ভারত, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়া। এসব দেশের মধ্যে কিছু দেশের রপ্তানি বেড়েছে।

বাংলাদেশে ৬৩৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জিজিএমএই এর সাবেক পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্টস লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মো: মহিউদ্দিন বলেন, ইউরোপের বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানির ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ তাদের অর্থনীতির উন্নতি।

কিছু সময় আগে বৈশ্বিক মূল্য স্ফীতির কারণে ইউরোপের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো পোশাক আমদানি কমিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা আবার বিভিন্ন উৎস দেশ থেকে আমদানি বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। তবে, কিছু প্রতিবন্ধতা রয়েছে, যা দূর হলে আমরা আরও ভালো ফলাফল পেতে পারব। একই সূত্র জানায়, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ক্রেতারা সস্তা ও দ্রুত পণ্য পেতে যেখানে সুবিধা পাবে, সেখান থেকেই আমদানি করবে।

এ কারণেই বাংলাদেশের তুলনায় কম্বোডিয়ার রপ্তানি দ্রুত বেড়েছে। তবে এটি আমাদের জন্য খুব বড় উদ্বেগের বিষয় নয়, যদি আমরা উৎপাদন খরচ কমিয়ে ক্রেতাদের উপযুক্ত মূল্য না দিতে পারি, তবে এটি চ্যালেঞ্জ হবে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্ক বৃদ্ধি হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। তবে সহায়ক শিল্প, কম লিড টাইম এবং শ্রমিক অসন্তোষ না হলে ইউরোপে আমাদের অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভিয়েতনাম দ্বিতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হলেও এই বছর প্রথম ১০ মাসে ইইউতে ৩৫৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, তাদের রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ।

পাকিস্তানের পোশাক রপ্তানি ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩১৩ কোটি ডলার এবং মরক্কো ২৫০ কোটি ডলারের রপ্তানি বেড়েছে, বেড়েছে ৮ শতাংশ। এ ছাড়া শ্রীলংকা রপ্তানি শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ৭ দশমিক ২২ শতাংশ কমেছে। রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, শিল্প খাতে স্থিতিশীলতা ফিরলে ইউরোপের বাজারে রপ্তানি আরও বাড়বে যা দেশে সামগ্রিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকা। পশ্চিমের শীতপ্রধান এ দেশগুলোতে ডিসেম্বর বড় উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে ব্যাপক বিক্রি হয়। নতুন নতুন পোশাক নিতে ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়েন।  আর এই বিক্রিকে কেন্দ্র করে পোশাক ক্রেতাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে বাংলাদেশে। তৈরি পোশাকের উদ্যোক্তারাও ডিসেম্বর কেন্দ্রিক এই অর্ডার নিতে সারা বছর আশায় থাকেন। কিন্তু এ বছর পোশাক শিল্পে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিকেএমইএর মতে, প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে গেছে।

উৎসবমুখর ডিসেম্বর উপলক্ষে ক্রেতারা জুন-জুলাই থেকে অর্ডার নেওয়া শুরু করেন। এই অর্ডারের বিপরীতে পরবর্তী ছয়মাস দেশের কারখানাগুলো সচল থাকে। সে কারণে জুলাই-ডিসেম্বরের বাণিজ্য সারা বছরের রপ্তানি খাতকে প্রভাবিত করে। বাইরের উস্কানিতে তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আশুলিয়াসহ পোশাক তৈরির শিল্পাঞ্চলে বারবার নানা বাহানায় শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি করে রাজপথে নামানো হচ্ছে পোশাক খাতের শ্রমিকদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

অতএব, পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষ দূর করা জরুরি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কমলেও ইউরোপে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতাকে ধরে রাখতে হবে। প্রবৃদ্ধির এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তৎপর ও মনোযোগী হতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সারজিসের আশ্বাসে শাহবাগ সড়ক ছাড়লেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা

শাহবাগে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সড়ক অবরোধ

উখিয়ায় বাসচাপায় নিহত ২

বগুড়ায় কাহালুতে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে নারীর আত্মহত্যা

বগুড়ায় ৭ দিনব্যাপী বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলা শুরু হচ্ছে

বগুড়া স্পোর্টস রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঘল, সম্পাদক আলিম