‘হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সৌদি সরকার বাংলাদেশের ওপর বিরক্ত’
হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সৌদি সরকার বাংলাদেশের ওপর অনেকটা বিরক্ত বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হজ এজেন্সিগুলো সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া, ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির শেষ দিন থাকলেও এখনো চুক্তি শুরু করতে পারেনি তারা। এরমধ্যে হজ এজেন্সির কোটা নিয়ে বারবার সৌদি সরকারের অনুরোধের কারণে সে দেশের সরকার আমাদের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে হজ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সর্বশেষ গতকাল (৮ জানুয়ারি) সৌদি সরকার জানিয়েছে- বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্য সেবাদানকারী কোম্পানি নির্বাচন, তাঁবুর এলাকা সংরক্ষণ, মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি/হোটেল ভাড়া, ক্যাটারিং কোম্পানির সাথে চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এখনও শুরু করা হয়নি। এসব কার্যক্রম সম্পাদনের সর্বশেষ তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি থাকলেও তারা কিছু করেনি।
হজ এজেন্সির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজযাত্রীরা কোনো সংকট কিংবা অনিশ্চয়তার মুখোমুখি না পড়ে এমন কোনো কাজ করবেন না। আমি হজ এজেন্সি মালিক বা পরিচালকদেরকেও দুয়েকদিনের মধ্যেই সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক লিড এজেন্সি গঠনসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুরোধ জানাই।
‘হজ এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রীর কোটা এক হাজার জন নির্ধারণ করে যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছ সৌদি সরকার। ফলে সেই সিদ্ধান্তের আলোকে চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনা করতে হবে।’
আরও পড়ুনএজেন্সি কোটা প্রথম ২৫০ পরে ৫০০ করার জন্য আমি ব্যক্তিগত দুইবার সৌদি সরকার ও বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি। এরপর কয়েক দফায় বৈঠক, ডিও লেটার দিয়েও এ ব্যাপারে পজিটিভ কোনো অগ্রগতি হয়নি— বলেন আ ফ ম খালিদ হোসেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, গত বছর ১৮ জুন সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর অনলাইনে জুম প্লাটফর্মে এক সভায় সৌদি সরকারকে সেই কোটা ২ হাজার হবে বলে পুনরায় জানানো হয়। সেই সভায় আমাদের দেশের হজ এজেন্সি মালিক বা প্রতিনিধিরাও ছিলেন। গত অক্টোবরে সৌদি আরব সফরের সময় সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে এজেন্সির কোটা গতবছরের মতো ২৫০ জন করার অনুরোধ করি। আমার পুনঃপুন অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিলেও তা হয় না। সর্বশেষ গত ২৪ নভেম্বর রাষ্ট্রদূত, একই অনুরোধ জানাই।
এরপর ৯ ডিসেম্বর হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী আমাকে একটি ডিও লেটার পাঠিয়েছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুই হাজার থেকে কমিয়ে এক হাজার নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ২০২৬ সনের হজের ২ হাজার হবে। এরপর হজ এজেন্সি মালিকদের অনুরোধে ফের গত ২২ ডিসেম্বর হজযাত্রীর কোটা ৫০০ জন করার অনুরোধ করে ডিও লেটার দেয়। পাশাপাশি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী এবং ভাইস-মিনিস্টারকে আমি ক্ষুদে বার্তাও পাঠিয়েছি। ডিও পত্র ও ক্ষুদে বার্তা পেয়ে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভাইস-মিনিস্টার আমাদেরকে কিছুটা আশ্বস্ত করে ফিরতি বার্তাও পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে লিখিত কোনো পত্র পাচ্ছিলাম না। গত ২ জানুয়ারি সৌদি সরকার ‘সুনির্দিষ্ট কমিটি’ তা অনুমোদন করেনি বলে জানায়। কোটা কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ঘাটতি ছিল না। হজ এজেন্সি যদি আমাদের দোষারোপ করে তাহলে ভুল হবে।
মন্তব্য করুন