ভিডিও বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

আবারও বাংলাদেশি হত্যা

আবারও বাংলাদেশি হত্যা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে  বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকান্ড অব্যাহত থাকা আমাদের ক্ষুব্ধ না করে পারে না। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, প্রায়ই নিয়মিত বিরতিতে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেক নেতাই এই হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো প্রতিশ্রুতিই কাজে আসছে না। সেগুলো যেন কেবলই কথার কথা।

আশ্চর্যই বলতে হয়, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে অথবা চীনের সঙ্গে ভারতের বৈরিতার সম্পর্ক থাকলেও ওই সব সীমান্তে বিএসএফ কাউকে গুলি বা নির্যাতন করে হত্যা করে না। অথচ বাংলাদেশ সীমান্তেই ঘটছে একের পর এক হত্যাকান্ড।

সর্বশেষ, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সীমান্তে একদিনের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশিকে হত্যা করল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে সাইদুল ইসলাম (২৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় ওই সীমান্তের গামাইতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক হলেন উপজেলার গামাইতলা গ্রামের মো: জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

আগের দিন মঙ্গলবার হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পর এবার উপজেলার বাল্লা সীমান্তের বড়কিয়া এলাকায় জহুর আলী (৫০) নামে এক বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও সীমান্তের ওপারের ভারতীয় লোকজন তাকে হত্যা করেছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। হত্যার পর ব্যক্তির লাশ ভারতীয় পুলিশ উদ্ধার করে ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

সীমান্তে হত্যাকান্ড নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা সন্দেহাতীতভাবেই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। বহু দেন দরবার, আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা এবং প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সীমান্ত হত্যা যেমন বন্ধ হয়নি, তেমনি ঘটছে নির্যাতনের ঘটনাও। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধে নেওয়া নানা ধরনের উদ্যোগ।  মিলিছে আশ্বাসও। কিন্তু এরপরও একের পর এক সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশিরা।

আরও পড়ুন

প্রসঙ্গত বলা দরকার, সাম্প্রতিককালে এটা জানা গিয়েছিল যে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গুলিতে যেন আর কারো প্রাণ না যায়, সে ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ। এর আগে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকেও এমন ঐকমত্য প্রকাশ করেছিল যে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে সীমান্তে যেন আর কারো প্রাণ না যায়। ফলে এরপরও যখন সীমান্তে হত্যা বন্ধ হচ্ছে না তখন বিষয়টি অত্যন্ত উৎকণ্ঠার- যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

আমরা বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ভারত বারবার বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিজিবির সঙ্গে একাধিক বৈঠক ও সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধে নানা কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু এরপরও যখন সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটছে তখন তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা চাই, কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্যাতন ও হত্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক।

নিরীহ ও নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যার প্রতিটি ঘটনা আমাদের হৃদয়কে শোকাভিভূত করে। আমরা আশা করব, ভারত সরকার সীমান্তে বিএসএফ’র স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিএসএফ কর্তৃক এমন মর্মন্তুদ ঘটনা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এমনটি অবশ্যই কারো কাম্য হতে পারে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার সীমান্তে হত্যাকান্ড বন্ধে জোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পরিভ্রমণে জবির ১১ রোভার

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ১০ হাজার বস্তায় আদা চাষ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে বিভিন্ন বালুমহলায় অভিযান, সরঞ্জাম জব্দ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ভূরুঙ্গা মাছের ফোয়ারা

নিত্যদিন নৌকায় যেন সাগর পাড়ি

বগুড়ার পদোন্নতিপ্রাপ্ত দুই পুলিশ সুপারকে বদলি